মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে জটিলতা নিরসন না হওয়ায় কর্মবিরতিতে গেল বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফরা।
কর্মবিরতির অংশ হিসেবে রাত ১২টা পর শিডিউলে থাকা ট্রেনগুলোতে উঠেননি রানিং স্টাফরা। ফলে প্রারম্ভিক স্টেশন থেকে কোনো ট্রেন ছেড়ে যায়নি। রানিং স্টাফের মধ্যে রয়েছেন ট্রেন চালক, গার্ড ও টিকিট চেকার পদধারীরা।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাত ১২টার পর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতির ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাঈদুর রহমান।
তিনি বলেন, আমরা রেল ভবন থেকে কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানতে পারিনি৷ রেল চলাচল বন্ধ রাখার বিষয়ে আমরা আমাদের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছি।
স্টেশনের দায়িত্বশীল একজন জানিয়েছেন, রাত ১২টার আগের যেসব ট্রেন ছেড়ে যায়নি সেগুলো ছেড়ে যাচ্ছে এখন। তবে রাত ১২টার পর শিডিউলের কোনো ট্রেন যাচ্ছে না।
রানিং স্টাফরা জানিয়েছেন, আমরা কোনো যাত্রী সাধারণকে কষ্ট দেব না। আজ রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত যেসব ট্রেন প্রারম্ভিক স্টেশন থেকে ছেড়ে যাবে, সেসব ট্রেনের প্রতিটি যাত্রীকে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছানো হবে। তবে ওই ট্রেনগুলো গন্তব্য স্টেশনে পৌঁছানোর পর রানিং স্টাফরা কর্মবিরতিতে যাবেন। ফলে কর্মবিরতি রাত ১২টায় শুরু হলেও লাইনে থাকা কোনো ট্রেন যাত্রা বিরতি থাকা স্টেশন ছাড়া অন্য কোথাও না দাঁড়িয়ে গন্তব্য স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছাবেন।
রেলপথ মন্ত্রণালয় ট্রেন চলাচল বন্ধের কর্মসূচি প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানালেও দাবি আদায়ে অনড় রয়েছে কর্মসূচি ঘোষণা করা বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতি।
সমিতির নেতারা জানিয়েছেন, নিয়ম অনুযায়ী একজন রানিং স্টাফ ট্রেনে দায়িত্ব পালন শেষে তার নিয়োগপ্রাপ্ত এলাকায় (হেডকোয়ার্টার) হলে ১২ ঘণ্টা এবং এলাকার বাইরে (আউটার স্টেশন) হলে ৮ ঘণ্টা বিশ্রামের সুযোগ পান। রেলওয়ের স্বার্থে কোনো রানিং স্টাফকে তার বিশ্রামের সময়ে কাজে যুক্ত করলে বাড়তি ভাতা-সুবিধা দেওয়া হয়। যা রেলওয়েতে ‘মাইলেজ’ সুবিধা হিসেবে পরিচিত।
তারা জানান, কর্মচারীদের অবসরোত্তর ৭৫ শতাংশ মাইলেজ মূল বেতনের সঙ্গে যোগ করে পেনশন নির্ধারণের বিধান প্রায় ১৬০ বছর ধরে চলমান ছিল। কিন্তু ২০২০ সালে রেলওয়ের কোডিফাইড রুল অমান্য করে রানিং স্টাফদের পার্ট অব পে হিসেবে গণ্য মাইলেজ, যা যুগ যুগ ধরে বেতন খাতের অংশ ছিল, সেখান থেকে সরিয়ে টিএ খাতে নেওয়ার ফলে জটিলতা তৈরি হয়। এরপর ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ রেলওয়ের রানিং স্টাফদের মাইলেজ যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি জানায়।
This post was created with our nice and easy submission form. Create your post!
GIPHY App Key not set. Please check settings