ভোজ্যতেলের দাম আরেক দফা বাড়ানোর সুযোগ দিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এখন থেকে এক লিটারের এক বোতল সয়াবিন তেল বিক্রি হবে ১৩৯ টাকায়, যা গত ১৭ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করা সর্বশেষ দামের চেয়ে লিটারপ্রতি ৪ টাকা বেশি।
আজ সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দাম বাড়ানোর বিষয়টি জানিয়েছে। বিশ্ববাজারে তেলের দাম যত বাড়ছে, এ খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়ছে। কারণ, আমদানির কর কাঠামো এমন যে আমদানিতে ব্যয় বাড়লে সরকারের রাজস্বও বাড়ে। অন্যদিকে ভোগান্তি বাড়ছে মানুষের।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন ও পাম তেলের বাজার অস্থিতিশীল। সে অনুযায়ী স্থানীয় মূল্য সমন্বয়ের জন্য দ্রব্যমূল্য পর্যালোচনাসংক্রান্ত জাতীয় কমিটি পরিশোধনকারী মিল ও ভোক্তা সাধারণের স্বার্থ বিবেচনা করে প্রয়োজনে সভায় মিলিত হয়।
বিস্তারিত পর্যালোচনার পর লিটারপ্রতি দুই টাকা বাড়িয়ে খোলা সয়াবিন ১১৭ টাকা, চার টাকা বাড়িয়ে এক লিটারের বোতল ১৩৯ টাকা, ৩০ টাকা বাড়িয়ে পাঁচ লিটারের বোতল ৬৬০ টাকা ওবং পাম সুপার তেল লিটারপ্রতি ৫ টাকা বাড়িয়ে ১০৯ টাকা নির্ধারণ করার সুযোগ দেওয়া হয়। কোম্পানিগুলো এই সর্বোচ্চ সীমার মধ্যে দাম নির্ধারণ করতে পারবে।
মন্ত্রণালয় আরও বলছে, ব্যবসায়ীদের প্রস্তাবের তুলনায় সয়াবিনের এক লিটারের বোতলে ১ টাকা এবং পাঁচ লিটারে ২৫ টাকা কমিয়ে ধরা হয়েছে।
বিশ্ববাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দ্রব্যমূল্য পর্যালোচনার জাতীয় কমিটি নিয়মিত ভোজ্যতেলের বাজার পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করছে। এ বৈঠকের পর এ নিয়ে দুই দফা দাম বাড়ানো হলো।
আজ বিকেল চারটার দিকে কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রতি পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের একটি বোতলের মোড়কে লেখা সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) ৬৩০ টাকা। তবে খুচরা বিক্রেতারা তা বিক্রি করছেন ৬১৫ থেকে ৬২০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দাম এত বেশি যে বিক্রি কমে গেছে।
বিক্রেতা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তথ্য অনুযায়ী, এর আগে দেশে সয়াবিন তেলের সর্বোচ্চ দাম ছিল ২০১২ সালে। তখন ব্যবসায়ীরা এক লিটারের বোতলের দাম ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করেছিলেন। গত মাসে একটি কোম্পানি এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৪০ টাকা নির্ধারণ করলেও তা পরে কমিয়ে ফেলে। এবার সরকারিভাবেই সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ করা হলো।
অবশ্য ব্যবসায়ীরা দুই বছর ধরে ভোজ্যতেলের তিন স্তরের বদলে এক স্তরে মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) আদায়ের অনুরোধ জানিয়ে আসছেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও একাধিকবার এ নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দেয়। যদিও ভ্যাট ছাড় মেলেনি।
ভোজ্যতেলে এখন আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট, ৪ শতাংশ অগ্রিম কর, উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে। একটি কোম্পানি দাবি করেছে, তাঁরা যে দরে পণ্য আমদানি করছে, তাতে এক লিটার সয়াবিনে ২৫ টাকার মতো করভার দাঁড়াচ্ছে। তবে সমস্যা হলো আমদানিতে দাম যত বাড়ে, সরকারের রাজস্ব আদায়ও বাড়ে।
কারওয়ান বাজারে কেনাকাটা করতে যাওয়া মোশারফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তেলের দাম তো প্রতি মাসেই বাড়ছে। সরকার এখন তো কিছু ছাড় দিতে পারে।
GIPHY App Key not set. Please check settings