ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে দেরির কারণ ব্যাখ্যা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থার মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, বিদেশ থেকে দালিলিক প্রমাণাদি না পাওয়ায় অনুসন্ধান ও তদন্ত কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার ঢাকার সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় প্রমাণাদি হাতে আসলে তদন্ত কর্মকর্তারা দ্রুত প্রতিবেদন জমা দেবেন।
রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠা জমির প্লট বরাদ্দে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে করা মামলায় ইতিমধ্যে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে দুদক। ছয়টি মামলায় আসামি করা হয়েছে সাতজনকে। তারা হলেন: শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক এবং ভাগ্নে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।
এছাড়া আরও কয়েকটি মামলায়ও এই পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে। এর মধ্যে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে অর্থ নেওয়ার অভিযোগে একটি মামলা ও গুলশানে ঘুষ হিসেবে ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা তদন্তাধীন।
তদন্তের সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে আক্তার হোসেন বলেন, “কমিশন অত্যন্ত সচেতন। যেসব অনুসন্ধান চলছে, সেগুলো গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। প্রমাণ হাতে আসলেই প্রতিবেদন দেওয়া হবে।”
তিনি জানান, এসব মামলার তথ্য সংগ্রহের জন্য বিদেশে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর) পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, “বিদেশ থেকে প্রয়োজনীয় প্রমাণ এখনো আসেনি। সেগুলো পেলেই প্রতিবেদন দেওয়া সম্ভব হবে।”
শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে দুদকের অবস্থান জানতে চাইলে আক্তার হোসেন বলেন, “তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হলে জানানো হবে। তবে পলাতক থাকলেও তদন্তে কোনো বিঘ্ন হবে না। তাদের অনুপস্থিতিতেও তদন্ত ও বিচার চলবে।”
গত ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে যান শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানা। শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন। শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন, কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর তিনি পদত্যাগ করেন।
এদিকে শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ১২৪টি ব্যাংক হিসাব থেকে ৬৩৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা জব্দ করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
দুদক মহাপরিচালক বলেন, “গুরুত্বপূর্ণ অনুসন্ধানগুলো দ্রুত শেষ করতে আমরা আন্তরিক। নির্ধারিত সময়সূচি মেনে তদন্ত এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে এবং সাংবাদিকদেরও অবহিত করা হবে।”
This post was created with our nice and easy submission form. Create your post!
GIPHY App Key not set. Please check settings