জানা অজানা।
#1 সুইডেন
কিছুক্ষণের জন্য অন্ধকারাচ্ছন্ন, বৃষ্টিসিক্ত ভয়াবহ অপরাধ নাটক বা চলচ্চিত্রের কথা ভুলে যান। ২০১৫ সালে (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্টেট ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের রেকর্ড অনুসারে), প্রায় ১০ মিলিয়ন জনসংখ্যার মধ্যে মাত্র ৯০টি খুনের ঘটনা ঘটেছিল এই সুইডেনে। আপনি যদি এখনও ভেবে থাকেন যে এত অল্প সংখ্যক নাগরিকের ক্ষেত্রে এটি অনেক কিছু, তাহলে মনে রাখবেন সুইডেনে কিন্তু মিশিগানের সমপরিমাণ বসবাসকারী রয়েছে। যে কোনও বছরে, ডেট্রয়েট খুনের সংখ্যা ৯০ এর চেয়েও অনেক বেশি।
বাস্তবিক অর্থে আসলে সুইডেন অতটাও অপরাধ মুক্ত নয়। পর্যটন মৌসুমে পকেটমারদের উৎপাত অনেক বেরে যায়। এমনকি, ধর্ষণের মত বর্বর ঘটনাও প্রচুর ঘটে থাকে। গোটা ইউরোপ জুড়ে সুইডেনে ধর্ষণের হার সবচেয়ে বেশি যা অবশ্যই আপনাকে বেশ অনিরাপধ বোধ করতে বাধ্য করবে। ২০০৫ সাল থেকে, সুইডিশ ধর্ষণ আইন বিশ্বের সবচেয়ে নারীবাদী আইন হয়ে উঠেছে। সম্ভবত এটি কোনও আশ্চর্যের বিষয় নয় যে মাত্র ১৫% সুইডিশ জনগণ রাতে একা একা হাঁটতে অনিরাপদ অনুভব করে থাকে।
#2 অস্ট্রিয়া
বিয়ার এবং সসেজের এই ক্ষুদ্র ইউরোপীয় দেশটি একদা ইতিহাসের মহান সাম্রাজ্যের এক স্থান ছিল। ভ্রমণের জন্য অস্ট্রিয়া বেশ নিরাপদ একটি রাষ্ট্র। মাত্র ১ মিলিয়ন জনসংখ্যার এই দেশটিতে যা কিনা সুইডেনের চেয়ে অনেক অনেক ছোট, বছরে ৪০ টি খুনের ঘটনা ঘটে থাকে। OECD এর আওতাধীন ৩৮টি দেশের মধ্যে এখানে আত্মহত্যার হার বেশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কম।
তবে এর মাধ্যমে এটা বলা যাবেনা যে অস্ট্রিয়া সম্পূর্ণরূপে সমস্যামুক্ত একটি দেশ। ২০১৫ সালের অভিবাসী সংকটের পর, দেশটি অল্প সময়ের জন্য মানব পাচারের একটি জনপ্রিয় পথ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা দেশের সড়কে পরিত্যক্ত ট্রাকের ৭০ জন অভিবাসীকে দুঃখজনক মৃত্যুতে পরিণত করেছে। তবে এসব কিছুর পাশাপাশি, অস্ট্রিয়া তারপরেও ব্যাপক আকারে একটি বন্ধুত্বসুলভ এবং অতি মনোরম দেশ যেখানে আপনি দিন শেষে সচরাচর তেমন কোন অপ্রীতিকর ঘটনার সম্মুখীন হবেন না।
Leave a Reply
GIPHY App Key not set. Please check settings
#3 সুইজারল্যান্ড
সুইজারল্যান্ড সম্পর্কে প্রথম আপনি যে জিনিসটি লক্ষ্য করবেন তা হচ্ছে এর ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। বিশ্বের সর্বোচ্চ আগ্নেয়াস্ত্র মালিকানা হারের এটি অন্যতম একটি দেশ যা কিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে সামান্য পেছনে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গোলাগোলির জন্য কুখ্যাত। এদিক দিয়ে সুইজারল্যান্ডে অপরাধ পরিক্রমা অবিশ্বাস্যভাবে কম। ২০১৪ সালে, ৮ মিলিয়ন জনসংখ্যার মধ্যে মাত্র ৪১ জন হত্যার ঘটনা ঘটেছিল।
Leave a Reply
GIPHY App Key not set. Please check settings
#4 জার্মানি
ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশ হচ্ছে জার্মানি। যথাক্রমে ২য় ও ৩য় অবস্থানে আছে ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড। জার্মানিতে এদের চেয়েও ১৫ মিলিয়ন জনসংখ্যা বেশি রয়েছে। এছাড়াও ইদানীংকালে সিরিয়া ও অন্যান্য যুদ্ধবিদ্ধস্ত এলাকা থেকে প্রায় ১ লাখেরও বেশি শরণার্থীদের নিজের দেশে ঠাই দিয়েছে জার্মানি।
OECD ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে নরগাতকদের সংখ্যার দিক দিয়ে ৯ম সর্বনিম্ন স্থানে রয়েছে জার্মানি। অর্থাৎ জার্মানির মত এত বড় এবং বিপুল জনমানবের রাষ্ট্রে আপনার হত্যা হবার সম্ভাবনা অস্ট্রিয়ার মত ছোট রাষ্ট্রের চেয়েও অনেক কম! ৮০ মিলিয়ন লোকের জার্মানিতে গড়ে খুনের সংখ্যা বছরে ২১০০ টি, যা সত্যিই অভাবনীয়। অপরদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিগত বছরগুলোতে বাৎসরিক খুনের সংখ্যা প্রায় ১৫০০০!
Leave a Reply
GIPHY App Key not set. Please check settings
#5 নরওয়ে
নরওয়ের জনসংখ্যা বেশ আশ্চর্যজনকভাবে মাত্র ৫ মিলিয়ন! ২০১৫ সালে নরওয়েতে বাৎসরিক হত্যার সংখ্যা ছিল মাত্র ২১টি। পরিসংখ্যানগতভাবে নরওয়েতে একমাত্র অপরাধ হচ্ছে চুরি যা কিনা বেশিরভাগ সময় প্রবাসীদের ক্ষেত্রেই ঘটে থাকে।
তবে এই না যে নরওয়ে পুরোপুরিরুপে ঝামেলা বা বিপদ মুক্ত। ২০১১ গাড়ি বোমা হামলা এবং এলোপাথাড়ি সন্ত্রাসী গোলাগোলিতে একসাথে ৭৭ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল।
২০১১ এর সেই ঘটনাকে চোখের আড়াল যদি করা হয় তাহলে বলা যায় যে, নরওয়ে সর্বোপরি বেশ শান্ত, আকর্ষণীয় ও সবচেয়ে ঝগ্রা/মারামারি মুক্ত একটি রাষ্ট্র।
Leave a Reply
GIPHY App Key not set. Please check settings
#6 ডেনমার্ক
নিরাপদ ও শান্তিময় দেশের তালিকায় ডেনমার্কের অবস্থান এতটাই ভালো যে এমনকি নরওয়ের লোকেরাও ডেনমার্কে গিয়ে ছুটি কাটাতে চায়। OECD দেশগুলোর মধ্যে খুনের হারের দিক দিয়ে ডেনমার্ক ৫ম সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে। মানুষের চলার পথে এখানে কোন প্রকারের অপরাধ কার্যক্রমের কথা তেমন একটা শোনাই যায়না। এমনকি দেশে যারা মাদক পাচারকারী রয়েছে তারা দেশ থেকে হেরোইন পাচার করার সময় যথাসম্ভব হিংস্রতা/গোলযোগ পরিহার করেই কাজ করার চেষ্টা করে।
Leave a Reply
GIPHY App Key not set. Please check settings
#7 আইসল্যান্ড
মাত্র ৩২৩,০০০ জনসংখ্যা সম্বলিত অতি দুর্গম ও নিম্ন জনসংখ্যার রাষ্ট্র আইসল্যান্ড। যদিও বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই দুর্গমতা অধিক হিংস্রতা/গোলযোগের কারন হয়ে দাড়ায় কিন্তু আইসল্যান্ডের ক্ষেত্রে তা একদমই বিপরীত। এখানে কোনও সশস্ত্র পুলিশকে রাস্তায় টহল দিতে দেখা যায়না কিন্তু তবুও কোথাও কোন সহিংসতার খবর সচরাচর পাওয়া যায়না। এখানকার লোকেরা এখনও রাতের বেলা দরজা বন্ধ না করেই ঘুমিয়ে যায়। এখানে যদি বছরে একটির চেয়ে বেশি খুন হয় তাহলে সেই বছরটিকে বেশ দুঃখজনক বা খারাপ বছর হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
আইসল্যান্ডের বেশীরভাগ মানুষই একে অপরকে চেনে এবং হয়ত এর কারনেই এখানে খুনের হার এতটা কম। আইসল্যান্ড ধনী রাষ্ট্র হওয়ায় এত নিরাপদ তা নয়, এটি এজন্যই এত নিরাপদ কারন এর জনগণ একে এভাবে তৈরি করে নিয়েছে।
Leave a Reply
GIPHY App Key not set. Please check settings
#8 জাপান
চলুন এবার ইউরোপের বাহিরের একটি দেশে নজর দেওয়া যাক। ১২৭ মিলিয়ন জনসংখ্যার দেশ জাপানে খুনের হারের দিক দিয়ে ৩য় সর্বনিম্ন অবস্থানে আছে। ২০১৫ সালে এদেশে খুনের সংখ্যা মাত্র ১ হাজারের চেয়ে সামান্য বেশি ছিল। অপরদিকে জপানারের চেয়ে ৩ গুন কম জনসংখ্যা হওয়া সত্ত্বেও একই সালে আমেরিকাতে খুনের সংখ্যা ছিল জাপানের চেয়ে ১৫ গুন বেশি। সুতরাং, এটা বলাই যায় যে, জাপান পৃথিবীর নিরাপদ ভূমিগুলোর মধ্যে অতি অন্যতম একটি।
জেনে রাখা ভালো যে, টোকিও হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ শহর এবং ওসাকা হচ্ছে ৩য় নিরাপদ শহর।
এত ভূয়সী প্রশংসা শোনার পর হয়ত আপনি জাপানে যেতে খুব আগ্রহী হয়ে উঠবেন কিন্তু তার আগে আপনার এটিও জেনে রাখা উচিত যে পৃথিবীর খুব মারাত্মক ক্ষতির সম্ভাবনাময় দেশ হচ্ছে জাপান। মানবজীবনে ক্ষতি মূলত ২ ধরনের হয়ে থাকে। একটি হচ্ছে মানুষের দ্বারা মানুষের ক্ষতি এবং আরেকটি হচ্ছে মাতৃভূমির দ্বারা প্রাকৃতিক ক্ষতি। জাপানের ক্ষেত্রে ২য় ক্ষতিটি অনেক বেশি হয়ে থাকে। প্রায়শই এখানে ভূমিকম্প ও সুনামির কারনে হাজার হাজার মানুষের নির্মম মৃত্যু ঘটছে।
Leave a Reply
GIPHY App Key not set. Please check settings
#9 লাক্সেমবার্গ
ইউরোপের অতি ক্ষুদ্র জাতিগুলোর মাঝে এটি একটি। এটি এতটাই ছোট যে এমনকি হল্যান্ডকেও তুলনামুলকভাবে এর চেয়ে বড় ধরা হয়। তবে এরা খুবই ধনী জাতি।
সহিংস অপরাধের কথা এখানে তেমন একটা শোনা যায়না বললেই চলে। ২০১৫ এর দিকে একটি সশস্ত্র ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে বটে কিন্তু এছাড়া ইদানীংকালে তেমন কোন আর অপরাধ কার্যক্রমের কথা শোনা যায়নি। যদিও লাক্সেমবার্গের জনসংখ্যা মাত্র ৫৪৩,২০২ তবুও এত কম অপরাধ ঘটনা বেশ প্রশংসাযোগ্য। OECD দেশগুলোর মধ্যে লাক্সেমবার্গের সহিংস অপরাধের হার সবচেয়ে কম এবং খুনের হার ৩য় সর্বনিম্ন।
এসমস্ত কিছুর পেছনে কারন হতে পারে দেশের উচ্চ মানের জীবনযাত্রা এবং অতি নিম্ন দারিদ্রের হার।
Leave a Reply
GIPHY App Key not set. Please check settings
#10 সিঙ্গাপুর
হ্যা, আপনি ঠিকই পড়ছেন। সিঙ্গাপুরই হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ দেশ। মাত্র ৫.৩ মিলিয়ন লোকের এই দেশে ২০১১ সালে কেবল ১৬টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। এখানে ক্রমবর্ধমান অপরাধের মধ্যে শুধুমাত্র সাইবার অপরাধই উল্লেখযোগ্য। কিন্তু তবুও এটি অন্তন্ত মানব হত্যার মত এত নিষ্ঠুর বা জঘন্য নয়।
শুনে বেশ আনন্দিত হবেন যে, সিঙ্গাপুর জাপানের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত নয়। বেশ পরিষ্কার এবং জীবন্ত একটি রাষ্ট্র। এখানে সামান্য চুইংগাম খেয়ে যেখানে সেখানে ফেলে দেওয়ার জন্যও আইনানুকভাবে জরিমানা করা হয়ে থাকে। সিঙ্গাপুরে আপনি বিশ্বাস করতে বাধ্য হবেন যে, এখানকার সরকার স্বাধীনতার চেয়ে নিরাপদে থাকাটাকে বেশি প্রাধান্য দেয়।
Leave a Reply
GIPHY App Key not set. Please check settings
This post was created with our nice and easy submission form. Create your post!
GIPHY App Key not set. Please check settings