মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বড় রাজনৈতিক জয় পেলেন বলাই যেতে পারে। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ পাশ করানোর ব্যাপারে সিনেটরদের ওপর চাপ দিচ্ছিলেন তিনি। শুক্রবারের (৪ জুলাই) মধ্যে বিলটি পাশ করাতে চাইছিলেন তিনি। শেষপর্যন্ত সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। কিন্তু নতুন এই বিতর্কিত বিল নিয়ে তার নিজের দলের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে।
জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিশ্লেষক পিটার লোগ বলেছেন, একটি বড় অংশের মানুষ এই বিলের বিরোধিতা করছেন কারণ, নতুন আইনে মার্কিন নাগরিকদের চিকিৎসা ও সামাজিক নিরাপত্তার ওপর সরকারের যে ব্যয় ছিল তা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কী আছে নতুন বিলে : দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার লড়াইয়ে নেমে নির্বাচনী প্রচারে বারবার এই বিলের কথা বলেছেন ট্রাম্প। জানিয়েছেন, ক্ষমতায় এলেই তিনি এই বিল বাস্তবায়িত করবেন। অবশেষে তা সম্ভব হলো। স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা খাতে ব্যয় সংকোচ করার পাশাপাশি এই বিলে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ও অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করার অধিকার দেওয়া হয়েছে। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোর ব্যাপারেও এই বিলে বিপুল অর্থ ধার্য করা হয়েছে। পাশাপাশি সামরিক খাতে ব্যয় বাড়ানোর কথাও বলা হয়েছে এই বিলে।
প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এই বিলে সেই সিদ্ধান্তগুলিকে বাতিল করা হচ্ছে। অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধের যে প্রকল্প ট্রাম্প গ্রহণ করেছেন, তাতে ব্যয় করা হবে ১৭ হাজার ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার। মেক্সিকোয় সীমান্ত পাচিল তৈরিতেও এই অর্থ খরচ হবে বলে জানানো হয়েছে। সীমান্তে পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হবে বলেও জানিয়েছেন ট্রাম্প।
সামরিক খাতে ব্যয় করা হবে ১৫ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার। এর মধ্যে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে ক্ষেপণাস্ত্র ও যুদ্ধ জাহাজ তৈরিতে। পরমাণু অস্ত্র তৈরিতেও বেশ কিছু অর্থ ব্যয় করা হবে বলে জানা গেছে। তবে পরিবেশবিদেরা সবচেয়ে বেশি চিন্তিত জীবাশ্ম জ্বালানি নিয়ে। প্রচারে ট্রাম্প একটি কথা বার বার বলেছেন, ‘ড্রিল বেবি ড্রিল’।
অর্থাৎ, নতুন করে খনিজ তেল উত্তোলন শুরু করতে হবে। এই বিলে সেই খাতে ব্যয় ধার্য করা হয়েছে। তোলা হবে প্রাকৃতিক গ্যাসও। এর আগে বিকল্প শক্তির জন্য সরকার যে অর্থ ব্যয় করেছিল, তা বদলে দেওয়ার নীতি হাতে নিয়েছেন ট্রাম্প। ইলেকট্রিক গাড়িতে ছাড় দেয়াও বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে।
ট্রাম্পের একসময়ের বন্ধু ইলন মাস্ক থেকে ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির একাধিক সদস্যও এই বিলের বিরোধিতা করছেন। তাদের অভিযোগ, ট্রাম্প মার্কিন অর্থনীতিকে খাদের ধারে নিয়ে গিয়ে দাঁড় করাচ্ছেন। এর ফলে যে কোনো সময় বিপর্যয় ঘটতে পারে। পাশাপাশি যেভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়গুলোকে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়েও বহু বিশেষজ্ঞ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে দেশের ভিতর।
This post was created with our nice and easy submission form. Create your post!
GIPHY App Key not set. Please check settings