রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ককে গতিশীল করতে ২৫ বছর মেয়াদি ‘কৌশলগত’ চুক্তি সই করেছে ইরান ও চীন। দীর্ঘ মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় ক্ষতিগ্রস্ত ইরান জো বাইডেন প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ জানাতেই এ চুক্তি, বলছে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। খবর ব্লুমবার্গ।
রবিবার (২৮ মার্চ) ইরানের রাজধানী তেহরানে ‘কম্প্রিহেনসিভ স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ’ নামে এ চুক্তি সই হয়। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ে ২০১৬ সালে ইরান সফরের পর থেকেই এ চুক্তির বিষয়ে কাজ শুরু হয়। তখনই শি জানিয়েছিলেন, আগামী দশকে দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি হবে।
চুক্তিতে ইরানের পক্ষে সই করেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ ও তার চীনের পক্ষে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। চুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত এখনো জানানো হয়নি। তবে এর একটি সম্ভাব্য খসড়া গত বছর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
সেখানে বলা হয়েছিল, চীনের কাছে দীর্ঘমেয়াদে অপরিশোধিত তেল সরবরাহ করবে ইরান। সেই সঙ্গে তেল, গ্যাস, পেট্রোকেমিক্যাল, পুনর্ব্যবহারযোগ্য ও পারমাণবিক শক্তির অবকাঠামোতেও বিনিয়োগ করবে দেশটি। সামরিক খাতেও সহযোগিতা করবে দুই দেশ।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাঈদ খতিবজাদে বলেন, নতুন এ চুক্তির মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক কৌশলগত স্তরে উন্নীত হবে। চুক্তি অনুযায়ী দুই দেশের বেসরকারি খাতের সহযোগিতা এবং বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পে ইরানের ভূমিকা থাকবে।
তেহরান ও বেইজিংয়ের জোটকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। চীনের বিরুদ্ধে নিজের মিত্রদের নিয়ে একটি জোট তৈরির চেষ্টা করছিল বাইডেন প্রশাসন। এমন সময়েই জোট গঠন করল ইরান-চীন।
ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন অবরোধের ফলে তাদের অর্থনীতি যেটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তা পুনরুদ্ধারে সাহায্য করবে চীনের সঙ্গে করা এই চুক্তি। দুটি দেশের ওপরই কোনো না কোনো মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই স্পষ্টতই এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি একটি বার্তা।
শুক্রবার তেহরানে পৌঁছেই প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে দেখা করে বৈশ্বিক পরাশক্তিগুলোর সঙ্গে হওয়া পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেন ওয়াং ই। প্রেসিডেন্ট রুহানি মার্কিন একতরফাবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার জন্য চীনকে ধন্যবাদ জানান।
পারমাণবিক চুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন ও ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে দুই দেশের মধ্যকার এ সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি আরো বলেন, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য চুক্তির পাশাপাশি এ অঞ্চলের সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে একসঙ্গে কাজ করবে ইরান ও চীন।
GIPHY App Key not set. Please check settings