in

অসহায় মেয়েদের আশ্রয় দেয়ার নামে ধর্ষণ!

একক চেষ্টায় নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন তরুণী। যার কারণে গ্রাম ছেড়ে শহরের দিকে পা বাড়ান। ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচিত এক বান্ধবী সহযোগিতার হাত বাড়ান। সিদ্ধান্ত হয় ঢাকায় যাওয়ার। কিন্তু কোথায় উঠবেন তারা। থাকবেন কার কাছে? মাথা গোঁজার মতো জায়গা ছিল না তাদের। আত্মীয়-স্বজন থাকলেও তাদের কাছে উঠতে চাননি কেউ। এমন সময় তাদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন দ্বিতীয় বান্ধবীর বন্ধু দেওয়ান রসুল হৃদয় নামে এক যুবক। একপর্যায়ে হৃদয় তার রাজধানীর ভাটারা থানাধীন ৮৫ কুড়িল পিনাকল পাম্পসংলগ্ন বাসার নিচ তলার একটি কক্ষে তাদের থাকার ব্যবস্থা করে দেন। কিন্তু ঘটনার দু’দিন পরই আলাপ করার কথা বলে হৃদয়ের তিন তলার বাসায় ডেকে পাঠান বাড়ি থেকে চলে আসা প্রথম তরুণীকে। ওই তরুণীর অভিযোগ, সেখানে নানা ভয়-ভীতি দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন হৃদয়। একই সাথে এই কথা কাউকে না বলার জন্য শাসিয়ে দেন। একইভাবে দ্বিতীয় বান্ধবী ও পর্যায়ক্রমে তাদের আরো একজন বান্ধবী অর্থাৎ তৃতীয় বন্ধবীকেও ধর্ষণ করেন তিনি। অবশেষে তিনজনই ভাটারা থানায় মামলা করেন হৃদয়ের বিরুদ্ধে। পুলিশ গত সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে সিরিয়াল ধর্ষক হৃদয়কে। 

পুলিশ জানায়, প্রায় ২৫ বছর বয়সী যুবক হৃদয় আগে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু তার নানা অপকর্মের কারণে স্ত্রী তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ওই সময় তাদের বিচ্ছেদও হয়ে যায়। সাবেক স্ত্রীর করা মামলায় জেল খেটে ছাড়া পান তিনি। এরপর থেকে বিভিন্ন মেয়ের সাথে অবৈধ সম্পর্ক চলতে থাকে। কোনোটা ওই মেয়েদের ইচ্ছায়, আবার কোনোটা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে অনৈতক সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। এভাবে চলতে থাকার একপর্যায়ে দ্বিতীয় বান্ধবীর সাথে পরিচয় হৃদয়ের। তার মাধ্যমেই বাকি দুই বন্ধবীর সাথে পরিচয় হয়। 

মামলাগুলোর এজাহারের বরাত দিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের বাড্ডা জোনের সহকারী কমিশনার এলিন চৌধুরী বলেন, নিজের চেষ্টায় কিছু করবেন বলে বাবা-মাকে না জানিয়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর বাড়ি থেকে বের হয়ে ফেসবুকে পরিচয় হওয়া দ্বিতীয় বান্ধবীর কাছে রাজধানীর গুলশান-বাড্ডা রিং রোডে আসেন ভুক্তভুগী। তথাকথিত ফেসবুক বান্ধবীর প্রস্তাবে গত ১২ সেপ্টেম্বর গাজীপুরে পুলপার্টিতে গিয়ে হৃদয়ের সাথে প্রথম দেখা হয় তার। দ্বিতীয় তরুণীর সাথে হৃদয়ের আগে থেকেই সম্পর্ক ছিল বলে জানা গেছে। ১৪ সেপ্টেম্বর হৃদয় ভাটারায় নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন দু’জনকে। ১৬ সেপ্টেম্বর মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন হৃদয়। ২০ সেপ্টেম্বর আরো দুই নারী একই সহযোগীর মাধ্যমে তার বাসায় আসে। এরপর তাদেরও পালাক্রমে ধর্ষণ করে হৃদয়।

পুলিশ সূত্র জানায়, এর আগে ওই তিন বন্ধবী হৃদয়কে তাদের অসহায়ত্বের কথা জানান। হৃদয় তাদের আশ^স্ত করে বলেন, কোনো অনুবিধা না থাকলে তিনি তার বাসার নিচ তলায় থাকার ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন। এই তিন তরুণী তাতে খুবই খুশি হন। কথামতো পরদিন ১৪ সেপ্টেম্বর দুই বান্ধবী রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কে যান।এরপর হৃদয় তাদের ভাটারার বাসার নিচতলায় একটি কক্ষে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। দু’দিন পর ১৬ সেপ্টেম্বর মামলার প্রথম বাদির সাথে কথা বলার জন্য হৃদয় তার তৃতীয় তলার বাসায় ডেকে নিয়ে যান। সেখানে একপর্যায়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের কথা কাউকে না বলার জন্য হুমকি দেন। ঘটনার চারদিন পর ২০ সেপ্টেম্বর ওই তরুণী তার দুই বান্ধবীকে বিষয়টি খুলে বলেন। এ সময় তারা অবাক হয়ে যান। তারা বলেন হৃদয় আমাদেরও বিভিন্ন সময়ে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেছে এবং এ কথা কাউকে বললে খুন করে ফেলবে বলেও হুমকি দিয়েছে। এরপরই তিন বন্ধবী মিলে ভাটারা থানায় গিয়ে মামলা করেন।

এসি এলিন চৌধুরী বলেন, শনিবার বিষয়টি জানার পরই ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠানো হয়। পরে অভিযান চালিয়ে ওই বাসা থেকে হৃদয়কে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার তিনজন ও যৌন হয়রানির শিকার একজনসহ মোট চারজন পুলিশের কাছে জবানবন্দী দিয়েছেন। পুরো বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

This post was created with our nice and easy submission form. Create your post!

Report

What do you think?

Written by Sultana

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

Loading…

0

আবারো বাড়ল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি

একি! জি পি এ ৫ বিক্রি !