২০২৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর-এক মহানায়কের রাজসিক প্রত্যাবর্তনের দিন। এই দিনটি ইতিহাসে স্থায়ীভাবে জায়গা করে নিল। ৬ হাজার ৩১৪ দিনের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে বৃহস্পতিবার দেশের মাটিতে পা রাখলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই দেশের আকাশ যেন অপেক্ষার ভারে নুয়ে পড়েছিল। সেই দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে তারেক রহমান যখন দেশের মাটিতে পা রাখলেন, তখন তা কেবল একজন মানুষের ফেরা ছিল না-ফিরে এসেছিল স্মৃতি, প্রত্যাশা আর অসমাপ্ত স্বপ্নের দীর্ঘ সারি।
প্রায় ১ লাখ ৫১ হাজার ৫৩৬ ঘণ্টা লন্ডনে নির্বাসিত থাকার পর সপরিবারে দেশে ফেরেন তারেক রহমান। ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান দলের শীর্ষ নেতাকর্মীরা। সেখান থেকে বেরিয়ে খালি পায়ে সবুজ ঘাসের ওপর দাঁড়ান তিনি, এক মুঠো মাটি তুলে নেন। পরে লাখো নেতাকর্মী তাকে ৩০০ ফিট সড়কে সংবর্ধনা দেন। দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থাকলেও নিখুঁতভাবে দলকে সুসংগঠিত করছেন তিনি। বিভিন্ন সময়ে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের নানা ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করেছেন। দলকে ঐক্যবদ্ধ ও শির শক্ত রেখেই তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঘটেছে।
শোষণ-নির্যাতনের শিকার হয়ে বিশ্বের অনেক নেতাই তাদের মাতৃভূমি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। বেছে নিয়েছিলেন পরবাসের অনিশ্চিত জীবন। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে স্বদেশে ফিরেছেন সেসব নেতা। এক্ষেত্রে দক্ষিণ আফ্রিকার মহান নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা, ইরানের আয়াতুল্লাহ খোমেনি, রাশিয়ার ভ্লাদিমির লেনিন, ফ্রান্সের নেপোলিয়ন বোনাপার্টের এই তালিকায় নাম লেখালেন তারেক রহমান।
২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সপরিবারে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যান তিনি। এর আগে দেশে ওয়ান-ইলেভেনের সময় প্রায় ১৮ মাস কারান্তরীণ থাকাকালে রিমান্ডে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হন। বিদেশে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগ সরকার তাকে দেশে আসতে দেয়নি। অবশেষে যখন তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন ঘটল, তখন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেত্রীসহ অনেক নেতাকর্মীই পলাতক। পতিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী বিদেশে আশ্রয় নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করেও তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঠেকাতে পারেনি। উলটো ৮ হাজার কিলোমিটার দূর থেকে বীরের বেশে মাতৃভূমিতে পা রাখেন তিনি।
This post was created with our nice and easy submission form. Create your post!


GIPHY App Key not set. Please check settings