বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য পোশাক খাতের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে অবহিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। এ লক্ষ্যে গতকাল বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সঙ্গে একটি বৈঠক করেছে সংস্থাটি। এ তথ্য উল্লেখ করে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিজিএমইএ জানিয়েছে, আইএমএফ প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন এজেন্ডায় পোশাক খাতের অবদানের প্রশংসা করেছে।
এতে আরো বলা হয়েছে, আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ দপ্তরে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি ইনামুল হক খান, সহসভাপতি মো. রেজোয়ান সেলিম, সহসভাপতি ভিদিয়া অমৃত খান এবং পরিচালক নাফিস-উদ-দৌলা ও ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনী।
আইএমএফ প্রতিনিধি দলে ছিলেন সিনিয়র ইকোনমিস্ট কিয়াও চেন ও রুইফেং ঝাং এবং ইকোনমিস্ট আয়া সাইদ। সংস্থাটির দিক থেকে এ বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য পোশাক খাতের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যতের ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে অবহিত হওয়া। এ সময় বৈশ্বিক অস্থিরতা সত্ত্বেও শিল্পের প্রবৃদ্ধির কৌশলগত উপায় নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়।
বিজিএমইএ জানিয়েছে, বৈঠকে পোশাক রফতানিতে মার্কিন শুল্কের সম্ভাব্য প্রভাব, বাংলাদেশের আসন্ন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের (এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন) প্রভাব, শিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি, মূল্য-সংযোজিত পণ্যে বৈচিত্র্যকরণের কৌশল ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সম্ভাব্য প্রভাব প্রভৃতি বিষয়গুলো বিশেষভাবে গুরুত্ব পায়।
এ সময় বিজিএমইএ প্রতিনিধিরা জাতীয় অর্থনীতিতে পোশাক শিল্পের অবদানসহ শিল্পের বিভিন্ন দিক আইএমএফ প্রতিনিধি দলকে অবহিত করেন। তারা শিল্পের কৌশলগত রূপকল্প তুলে ধরে জানান, পোশাক শিল্প বর্তমানে শ্রমনির্ভর মডেল থেকে বেরিয়ে এসে মূল্য-সংযোজিত পণ্য, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিগত মানোন্নয়নের মাধ্যমে একটি উচ্চমূল্যের মডেলে স্থানান্তরিত হওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। এর অংশ হিসেবে ম্যান-মেড ফাইবার ও টেকনিক্যাল টেক্সটাইলভিত্তিক পোশাক তৈরিতে সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়নের ওপর বিশেষভাবে জোর দেয়া হয়েছে।
বৈঠকে বিজিএমইএ প্রতিনিধিরা জানান, বর্তমান বোর্ড এরই মধ্যে শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ, বন্দর ব্যবস্থাপনার দক্ষতার উন্নয়ন, কাস্টমস ও বন্ড প্রক্রিয়া সহজীকরণ, সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে আনয়ন এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য সরকারকে সুপারিশ করেছে।
তারা আরো জানান, বিজিএমইএ বোর্ড এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর শুল্ক সুবিধা বজায় রাখতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, জাপান ও কানাডাসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) এবং অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) করার বিষয়ে সরকারকে অনুরোধ করেছে।
This post was created with our nice and easy submission form. Create your post!


GIPHY App Key not set. Please check settings