in

বিড়ালের চোখ উপড়ানোয় জড়িতদের খুঁজছে পুলিশ

রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে কয়েকদিনের ব্যবধানে চারটি বিড়াল উদ্ধার করা হয়েছে, যেগুলোর চোখ উপড়ানো। এ ধরণের নিষ্ঠুর আচরণের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাণীপ্রেমীরা। ইতোমধ্যে ধানমন্ডি থানা পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। 

পুলিশ বলছে, বিড়ালগুলো দেখে মনে হয়েছে এগুলো কোনো বাসায় পোষা হত। চোখ উপড়ানোর পর সেগুলো কে বা কারা ফেলে গেছে। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে  জড়িতেদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

বিড়ালের উপর নিষ্ঠুরতার ঘটনায় সারহা ফাতিমা নামে প্রাণীপ্রেমী গত রোববার ধানমন্ডি থানায়  অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, কয়েকদিনের ব্যবধানে ধানমন্ডি ১২/এ এলাকার তাকওয়া মসজিদের আশপাশে কে বা কারা চোখ উপড়ানো চারটি বিড়াল ফেলে রেখে গেছে। এগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। এটি কোনো সিরিয়াল আপরাধীদের কাজ। যারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে নিরীহ প্রাণীর উপর নির্মম নির্যাতন চালাচ্ছে। এ ধরনের নির্মমতা ভবিষ্যতে মানুষের প্রতি সহিংস আচরণে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বিড়ালের উপর এই নির্মমতা প্রাণী কল্যাণ আইনে অপরাধ। 

ধানমন্ডি থানার ওসি ক্যশৈন্যু মারমা গতকাল বুধবার সমকালকে বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। যে স্থান থেকে বিড়াল উদ্ধার করা হয়েছে সেখানকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ফুটেজ বিশ্লেষণ করে বিড়ালগুলো যারা ফেলে গেছে, তাদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। প্রাণীর চোখ উপড়ে ফেলা দণ্ডনীয় অপরাধ। জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি আরও বলেন, কোনো সাইকোপ্যাথ ছাড়া কেউ বিড়ালের চোখ উপড়ে ফেলার মতো নিষ্ঠুরতা দেখাতে পারে না।
উদ্ধার হওয়া দুটি বিড়াল রয়েছে পুরান ঢাকার দয়াগঞ্জের বাসিন্দা প্রাণীপ্রেমী ইলিন জাহানের কাছে। কীভাবে বিড়াল দুটি পেলেন তার বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমরা রাস্তাঘাট থেকে অসুস্থ বিড়াল উদ্ধার করে চিকিৎসা করাই। ফেসবুক গ্রুপে আমাদের মোবাইল নম্বর দেওয়া আছে। মানুষ ফোন করলে বিড়াল উদ্ধার করে নিয়ে আসি। এই মুহূর্তে আমার কাছে ৫০টির মত বিড়াল রয়েছে। 

গত ৩০ অক্টোবর সন্ধ্যায় ধানমন্ডির তাকওয়া মসজিদের কাছ থেকে প্রাণীপ্রেমী জায়নাব রহমান চৌধুরী ফোন করে জানান, একটি বিড়াল পাওয়া গেছে। চোখে সমস্যা। প্রথমে চোখের সমস্যার কথা গুরুত্বের সঙ্গে নেইনি। কারণ বিড়ালের চোখে নানা কারণে সমস্যা হয়ে থাকে। তাকে বিড়াল নিয়ে ধানমন্ডির একটি ক্লিনিকে যেতে বলি। পরে রাতেই তার কাছ থেকে সেটি নিয়ে আসি। একটি চোখ উপড়ানো। আরেকটি উপড়াতে গিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। পরে ক্লিনিকে নিয়ে চিকিৎসা করাই। 

ইলিন জাহান জানান, ৩১ অক্টোবর বিকেলে জায়নাব আবারও তাকে ফোন করে একই স্থান থেকে আরেকটি অসুস্থ বিড়াল উদ্ধারের কথা জানান। বিড়ালটির দুটো চোখই উপড়ানো। ওইদিনই সেটি তার বাসায় নেওয়া হয়। চিকিৎসা করানো হয় । 

বিড়াল দুটির সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে ইলিন জাহান বলেন, একটির অবস্থা খুবই খারাপ। আরেকটি মোটামুটি। চিকিৎসক আমাদের জানিয়েছেন, চোখগুলো কোনো কিছু দিয়ে খুঁচিয়ে উঠানো হয়েছে। ধারণা করছি, কোনো সাইকোপ্যাথ ব্যক্তি এ ধরণের কাজ করতে পারে। নির্যাতনের পর পশুপাখিকে যন্ত্রণায় ছটফট করতে দেখে তারা আনন্দ পায়। ৩১ অক্টোবর একই এলাকা থেকে রুমানা বৈশাখী নামে আরেক প্রাণীপ্রেমী একটি চোখ উপড়ানো বিড়াল উদ্ধার করেন বলে জানান তিনি। 

বেসরকারি বিশ্বিবদ্যালয়ের ছাত্রী জায়নাব রহমান চৌধরী জানান, ৩০ অক্টোবর সন্ধ্যায় তিনি ধানমন্ডি লেক পাড় দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। তাকওয়া মসজিদের পাশে একটি বিড়ালটি বসেছিল। সেটির দিকে এগিয়ে দেখেন, চোখ উপড়ানো। এরপর প্রাণি উদ্ধার করে বাসায় রাখেন এমন ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। পরে দয়াগঞ্জের ইলিন জাহানকে বিড়ালটি দিয়ে দেন। শুক্রাবাদ থেকে আরেকটি অসুস্থ বিড়াল উদ্ধারের কথা শুনেছেন তিনি।

জায়নাব বলেন, ওই দিন এলাকার লোকজন জানিয়েছিল, সপ্তাহ খানেক ধরে তারা দুটি বিড়াল চোখ উপড়ানো অবস্থায় ঘুরতে দেখেন। অবশ্য সেদিন একটিই পেয়েছিলাম। পরদিন আরেকটি উদ্ধার করা হয়।  প্রায়ই লেকে হাঁটতে যাই। কুকুর, বিড়াল দেখলে আদর করি। 

This post was created with our nice and easy submission form. Create your post!

Report

What do you think?

Written by Sultana

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

Loading…

0

ফাঁদে ফেলে গাড়ি-টাকা হাতিয়ে নিয়ে চম্পট দেয় তরুণ–তরুণী

‘আমার মেয়র, তোমার মেয়র– মামদানি, মামদানি’!!