চট্টগ্রাম বন্দরের কুয়াশা ভেদ করে প্রতিদিন যেসব কনটেইনারবাহী ট্রাক ঢাকার দিকে দিকে ছুটে চলে, তার অনেকগুলোর ভেতরে থাকে ‘মেড ইন চায়না’ লেখা যন্ত্রাংশ, পোশাক, ইলেকট্রনিক-সামগ্রীসহ বিভিন্ন কাঁচামাল। অপরদিকে বন্দরের গেট পেরিয়ে চীনের উদ্দেশে যাত্রা করে চিংড়ি, চামড়া, জুটজাত পণ্য ও অন্যান্য রফতানিপণ্য ভরা কনটেইনার। এই যাওয়া-আসার গল্পটাই আজ বাংলাদেশের অর্থনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়—নাম তার চীন। চীনের উত্থান কেবল বৈশ্বিক অর্থনীতিতেই নয়, বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও নতুন বাস্তবতা তৈরি করেছে। এখন প্রশ্ন, বাংলাদেশ কি প্রস্তুত এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগোতে?
চীন শুধু বাণিজ্যে নয়, পদ্মা সেতু, পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্প, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েগুলোতে এবং কর্ণফুলী টানেলসহ বড় অবকাঠামো নির্মাণে সহায়তা দিয়ে আসছে। চীনা বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি বাংলাদেশকে শুধু অবকাঠামো নির্মাণে সাহায্য করছে না, বরং শিল্প উৎপাদন, রফতানি ও বৈদেশিক বাণিজ্যেও নতুন গতি আনছে।
রফতানিতে চীনের অবদান: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, বাংলাদেশের রফতানি খাতকে গতিশীল রাখতে যেসব কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি প্রয়োজন, তার বেশিরভাগ আসে চীন থেকে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “আগে মূলধনি যন্ত্রপাতি প্রধানত জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আসতো। এখন সেই জায়গা দখল করেছে চীন। ফলে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে চীনা কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি বাড়িয়েছে।”
বাংলাদেশের শিল্প উৎপাদন ও রফতানি সক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে চীনের ওপর নির্ভরতা ক্রমেই বাড়ছে। এটি দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও গভীর করেছে, যেখানে শুধু অর্থনৈতিক হিসাবই নয়, কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকেও চীনের প্রভাব স্পষ্ট।
This post was created with our nice and easy submission form. Create your post!
GIPHY App Key not set. Please check settings