ধানমন্ডি রিক্রিয়েশন ক্লাব লিমিটেড, মূলত এটি একটি সামাজিক ক্লাব। রাজধানীর ধানমন্ডিতে মেট্রো শপিংমলের পঞ্চম তলায় অবস্থিত এই ক্লাবের নেই বারের কোন লাইসেন্স। শুধু একটি স্টোর আছে, যেখান থেকে শুধু ক্লাবের সদস্যরাই পার্সেল নিতে পারেন।অথচ আইন ও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে যেকেউ-ই পার্সেল নিতে পারছেন এখন। সেইসঙ্গে নিয়মনীতি থোড়াই কেয়ার করে সেখানে চলছে বারও। অথচ মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে এখানে বার চালানোর কোন অনুমোদন নেই। অন্তবর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর নতুন করে কোনো বারের লাইসেন্সও দেয়নি। এর ফলে বছরে মোটা অংকের রাজস্ব এবং শুল্ক হারাচ্ছে সরকার।
মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে ধানমন্ডি ক্লাবের এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হয়েছে। এই ক্লাবের আরেকটি ব্রাঞ্চ আছে পান্থপথে। এটি ধানমন্ডি ক্লাব লিমিটেড নামে কলাবাগান থানাধীন বীর উত্তম সিআর দত্ত সড়কে চলছে। অবশ্য এটার লাইসেন্স আছে। কিন্ত অবাধে অশ্লীলতা ও পারমিট ছাড়েই লোকজনের উপস্থিতি বেশি থাকায় এখানে আসেনই না ক্লাবের দীর্ঘদিনের সদস্যরা। অশ্লীলতা আর দূষিত পরিবেশের কারণে তারা এখানে যেতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর ৭ সদস্যের একটা ইন্টেরিম কমিটি করা হয়েছে ক্লাব পরিচালনায়। আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর ক্লাবের নির্বাচন। সদস্যরা বলছেন, তারা এমন কমিটি চান যারা আগের মতো পরিবেশ ফিরিয়ে আনবে। ক্লাবে যেতে পারবেন সদস্যরা। ধানমন্ডির মত অভিজাত এলাকায় রিক্রিয়েশন ক্লাব নামে অবাধে বার ব্যবসা বন্ধের দাবি তাদের।
একইসঙ্গে ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারাও এখানে বার ও জুয়ার আসর চালানোর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বেসরকারি চাকরিজীবী চারু শিকদার বলছেন, রিক্রিয়েশন ক্লাবের নামে অশ্লীলতা ও অসামাজিক কার্যকলাপ ধানমন্ডিবাসী মেনে নেবে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ধানমন্ডির বাসিন্দা একজন সরকারি চাকুরিজীবী বলেছেন, বিভিন্ন সংস্থা এসব প্রতিষ্ঠানের অবৈধ উপার্জনের ভাগ পায় বলেই এদের বিরুদ্ধে সঠিক ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয় না। মেট্রো শপিংমলের একজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিভিন্ন সময়ে এই ক্লাবের নামে বার চালানো বন্ধের দাবি উঠলেও শেষমেশ এটা ম্যানেজ হয়ে যায়। এখানে বার চালানোয় মার্কেটের পরিবেশের ওপরও প্রভাব পড়ছে।
এ ব্যাপারে জানতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের জনসংযোগ ও গোয়েন্দা শাখায় যোগাযোগ করা হলে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানানো হয়, স্টোরের অনুমোদন নিয়ে মদের বার চালানোর বিষয়টি অধিদপ্তরের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি মিললেই অভিযান চালানো হবে।
এ বিষয়ে কমিটির সদস্যদের সাথে দফায় দফায় যোগাযোগ করা হলেও ফোন ধরেননি তারা।
প্রসঙ্গত, রাজধানীতে ক্লাবের অন্তরালে মাদক, ক্যাসিনো ও জুয়া ঠেকাতে অংশ হিসেবে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ধানমন্ডি ক্লাবে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় মদের বার সিলগালা করে দেয়া হয়। পরে অবশ্য খুলে দেয়া হয়।
This post was created with our nice and easy submission form. Create your post!
GIPHY App Key not set. Please check settings