in

জাকির নায়েকের স্কুল বিষয়ক কিছু কথা।

বছর দশেক আমাদের দেশের মানুষ জানতে পারে পিস টিভি এবং পিস স্কুল। বিতর্কিত ইসলামি বক্তা জাকির নায়েকের পিস টিভির পাশাপাশি পিস স্কুলগুলোও ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের ব্যাপকভাবে আকর্ষণ করেছিল। বিশেষ করে নিয়ম শৃঙ্খলা এবং পাঠদান প্রক্রিয়ার কারণে এই স্কুলগুলোতে সচেতন অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের ভর্তি করাতে শুরু করেছিলেন। অভিভাবকদের এত আগ্রহের কারণে বিদেশের পাশাপাশি বাংলাদেশেও খুব দ্রুত গজিয়ে উঠতে শুরু করে একের পর এক পিস স্কুল। কিন্তু ২০১৬ সালের জুনে হলি আর্টিজান হামলার পর বদলে যায় সবকিছু। গোয়েন্দারা জানতে পারেন, হলি আর্টিজানে হামলাকারীরা জাকির নায়েকের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে জঙ্গিবাদে লিপ্ত হয়েছিল। এরপর তদন্তে বেরিয়ে আসে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যায়, জাকির নায়েকের সরাসরি তত্ত্বাবধানে এবং তার অনুসারিদের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী যে স্কুলগুলো পরিচালিত হচ্ছে সেখানে শিশুদের সন্ত্রাসবাদে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এমনকি কোনো অনুমোদনের তোয়াক্কা না করেই চলছিল বাংলাদেশের পিস স্কুলগুলো। এসব তথ্য বেরিয়ে আসার পর থেকেই আইনশৃংখলা বাহিনী পিস স্কুল বন্ধ করে দিতে শুরু করে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশেই গত কয়েক বছরে অধিকাংশ পিস স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে এখনও চালু আছে জাকির নায়েকের স্কুল। বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে পাওয়া তহবিল থেকেই এই স্কুলগুলো চলে।

#1 পিস স্কুলের শিক্ষাদান প্রক্রিয়া

ছোটদের পিস স্কুলে ভর্তি করা হয় প্লে গ্রুপ থেকে ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত। প্লে গ্রুপ থেকেই ছাত্রছাত্রীদের জন্য পৃথক কাসরুম ও পৃথক ফোরের ব্যবস্থা থাকে। প্লে, নার্সারি ও কেজি মিলে প্রি-স্কুল সেকশন। এই সেকশনের সময়সূচি সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বেলা ১০টা পর্যন্ত মর্নিং শিফট আর বেলা সাড়ে ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত ডে শিফট। শিশুরা যেন তাদের মাতৃভাষা, আরবি এবং ইংরেজিতে অনর্গল লেকচার দিতে পারে, সেভাবেই তাদের পড়ানো হয়। কোরয়ান তেলাওয়াত, আবৃত্তি, অভিনয়, আর্ট-ক্যালিগ্রাফি ও ইসলামি সঙ্গীতসহ তারা বহুমুখী প্রতিভার বিকাশ ঘটায় পিস স্কুল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

#2 কারিকুলাম

প্রতিটি দেশের সরকার প্রণীত ন্যাশনাল কারিকুলাম, ইংলিশ ভার্সন মূলত এ স্কুলের কারিকুলাম। আরবীর পাশাপাশি শিশুদের মাতৃভাষাটাও ব্যকরণসহ এই স্কুলে শেখানো হয়। সাপ্তাহিক ও মাসিক শ্রেণী পরীক্ষা ছাড়াও প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীর নৈতিক ও মানবিক উন্নয়নে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করা হয়। স্কুলে জেনারেল এডুকেশনে কমপক্ষে আল কুরআনের তিন পারা সমপরিমাণ বাছাইকৃত আয়াতের হিফজ এবং ১০০টি সহি হাদিস ও ৫০টি দোয়া মুখস্থ করানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

#3 বই ও ক্লাসরুম

প্রি-সেকশনের বই তিন ভাষায় পুরোপুরি ডিজিটাল। অডিও-ভিজুয়াল কাস প্রেজেন্টেশন সিস্টেম। প্রতিটি শ্রেণিকক্ষে থাকে শিশুবান্ধব আলোকসজ্জা ও ৩ডি স্টুডিও ব্যাকগ্রাউন্ড। ডিজিটাল সফটওয়্যার-বেজড স্কুল ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে পাঠ অগ্রগতি মনিটরিং করা, সিসিটিভি দিয়ে কাসরুম মনিটরিং, ফিঙ্গারিং অ্যাটেনডেন্স মেশিনের সাহায্যে অটো রোল কলিং, কম্পিউটার ল্যাব রয়েছে প্রায় প্রতিটি পিস স্কুলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

#4 কো-কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিস

পিস স্কুলের পুরো ম্যাথডই হলো কো-কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিস-নির্ভর। কারণ, অ্যাসেম্বলি থেকে শুরু করে কাসে পাঠ্যবইয়ের সব বিষয়ের সবগুলো পাঠই শিশুরা গ্রহণ করে আনন্দ, মজা আর খুশিমনে। গানে-গানে, ছড়ায়-কবিতায়, আবৃত্তি-অভিনয়ে। লেকচার টেবিলে সবাইকেই সব সাবজেক্ট প্র্যাকটিস করতে হয় নিয়মিত। ছায়া আদালত ও ছায়া সংসদের মাধ্যমে তাদের শেখানো হয় বক্তৃতা-বিতর্ক। আর্ট ও ক্যালিগ্রাফি প্রশিক্ষণ দেওয়া ছাড়াও ছাত্রছাত্রীদের বহুমুখী প্রতিভা ও সৃজনশীলতার বিকাশ সাধন করা হয় এখানে। কিন্তু এই হাসি আনন্দের মাঝেই শিশুদের মাঝে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় ধর্ম বিষয়ক কট্টর চিন্তা-ভাবনা।  

এই স্কুলগুলোতে শুধু যে, শিশুদেরই পড়ানো হয়, তা নয়। পাঠদান করা হয় শিক্ষকদেরও। প্রতি শুক্রবার শিক্ষকদের বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা থাকে। এজন্য শিশুদের তারা খুব সাবলীলভাবে পড়াতে পারে।

পিস স্কুলের আরেকটি নিয়ম হলো, শিশুদের কোনো হোম ওয়ার্ক দেওয়া হয় না। ক্লাসেই তাদের সবকিছু শেখানো হয়। এত সুযোগ সুবিধার কারণে স্বাভাবিকভাবেই অবিভাবককরা পিস স্কুলে শিশুকে ভর্তির ব্যাপারে আগ্রহী হন। প্লে গ্রুপে ভর্তির ক্ষেত্রে নেওয়া হয় বাংলাদেশি টাকায় ২০ হাজার টাকার মতো। উপরের ক্লাসে ভর্তি ফি আরও বেশি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

#5 বিশ্লেষকরা যা বলেন

মূলত পাঠদান প্রক্রিয়ার কারণেই বাবা-মায়েরা একটা সময় পিস স্কুলের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা গেল, ধর্মশিক্ষায় নামে পিস স্কুলে উগ্রপন্থার ওপরই বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। এমনকি জাতীয় সঙ্গীত, দেশাত্ববোধ এই স্কুলগুলোতে একেবারেই নিষিদ্ধ। আর এসব কারণে উন্নত পাঠদান প্রক্রিয়া থাকার পরেও পিস স্কুলগুলো আজ অনেক দেশেই নিষিদ্ধ।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

This post was created with our nice and easy submission form. Create your post!

Report

What do you think?

Written by Azaher Ali Rajib

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

Loading…

0

যিশু খ্রিস্টের সমাধি কোথায়?

অতিরিক্ত ঘুম, বিপদকে বন্ধু হিসেবে বেছে নিচ্ছেন আপনি।