in

‘আমার মেয়র, তোমার মেয়র– মামদানি, মামদানি’!!

নিউইয়র্কের মেয়র পদে জোহরান মামদানির ঐতিহাসিক বিজয়ে উল্লাস করেছেন সেখানকার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিনিরা। গত মঙ্গলবার রাতে ফল প্রকাশের পর তারা বিভিন্ন স্থানে বিজয় মিছিল বের করেন। শহরের জ্যাকসন হাইটস থেকে বের হয় বড় একটি মিছিল। এ সময় নানা প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার তাদের হাতে দেখা যায়। মিছিলকারীরা স্লোগান দেন– ‘আমার মেয়র, তোমার মেয়র– মামদানি, মামদানি।’ 

নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানিও গতকাল বুধবার বাংলায় স্লোগান দিয়ে ঐতিহাসিক বিজয় উদযাপন করেন। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, মামদানি মাইক্রোফোন ধরে স্লোগানটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সমর্থকরা উৎসাহে সঙ্গ দিয়ে ‘জোহরান, জোহরান’ বলে সাড়া দিচ্ছেন। বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, গত মঙ্গলবার রাতে বিজয়ের খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুইন্সজুড়ে, বিশেষ করে জ্যামাইকায় এ উদযাপন শুরু হয়। মিছিলে আরও স্লোগান ছিল– ‘নিউইয়র্কের মেয়র– মামদানি-মামদানি’, ‘শ্রমিক শ্রেণির মেয়র– মামদানি-মামদানি’।

দ্য নিউইয়র্ক টাইমস গতকাল বুধবার লিখেছে, মামদানির বিজয়ে দীর্ঘ বঞ্চনার শিকার নিউইয়র্কের মুসলিমরাও উল্লসিত। তারা কুইন্সের অ্যাস্টোরিয়ার সড়কে নেমে বিজয় মিছিল করেন। এর আগে মঙ্গলবার রাতে ভোটের ফল জানতে তারা নিউইয়র্কের ডেমোক্র্যাট ক্লাবে জড়ো হন। অধিকাংশই দক্ষিণ এশিয়া বংশোদ্ভূত মার্কিনি।

স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৯টায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হলে চারদিকে ‘মামদানি’ কোরাস ওঠে। মোবাইল ফোনের বাতি জ্বালিয়ে শুরু হয় উদযাপন। অনেকে ক্যামেরায় দৃশ্যধারণ শুরু করেন। ৩২ বছরের ফাতিমা খান চিৎকার করে বলেন, ‘এটা অলৌকিক! তিনি জিতেছেন!’ আগামী ১ জানুয়ারি শপথ নেবেন জোহরান মামদানি।
একটি ফুটেজে দেখা যায়, ফল ঘোষণার পর জড়ো সমর্থকরা চিৎকার করে ওঠেন। অনেকে আনন্দে কান্না শুরু করেন। সমর্থকদের অধিকাংশই তরুণ-তরুণী। ৪১ বছরের সুমাইয়া চৌধুরী বলেন, ‘ভোট দিয়েছিলাম আগেই। ফল শুনে (আনন্দে) কান্না করেছি।’

মামদানির বাংলা সংযোগ
ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হওয়ার পর বিভিন্ন ভাষায় ভিডিও তৈরি করে তা সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করতে থাকেন। এ সময় বাংলাতেও প্রচারণা চালান তিনি। পরে তাঁর প্রচারণায় অনেক বাংলাদেশি অংশ নেন। একটি ভিডিওতে লিটল বাংলাদেশ কেনসিংটনের বাঙালি কাউন্সিল মেম্বার শাহানা আরিফকে সঙ্গে নিয়ে মামদানিকে ভাঙা বাংলায় ‘র‍্যাঙ্ক চয়েস ভোটিং’ পদ্ধতিটি সাধারণ ভোটারদের কাছে বাঙালি মিষ্টির প্লেট নিয়ে ব্যাখ্যা করতেও শোনা গেছে। ভিডিওর শেষ দিকে এসে হাসতে হাসতে মামদানি শাহানা আরিফকে জিজ্ঞেস করেন, ‘আমার বাংলা ভালোই, তাই না?’ শাহানা একটু ইতস্তত করে জবাব দেন, ‘খারাপ না!’
বিবিসি লিখেছে, বিষয়টি নিউইয়র্কের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ভোটারদের যে আকৃষ্ট করেছে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। নিউইয়র্কে জ্যাকসন হাইটসসহ বাংলাদেশি অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকায় প্রচারের সময় তাঁকে বাঙালি ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গেও বাংলায় টুকটাক কথা বলতেও শোনা গেছে।

মামদানির বাংলা কানেকশনের পেছনে সবচেয়ে বড় অনুঘটক হলেন তাঁর মা– আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্র পরিচালক মীরা নায়ার। তাঁর জন্ম ভারতের উড়িষ্যায় বাঙালি অধ্যুষিত শহর রাউরকেল্লায়। তিনি বড় হয়েছেন ওই রাজ্যের রাজধানী ভুবনেশ্বরে, সেখানেও জনসংখ্যার একটি বড় অংশ বাঙালি। মীরা নায়ারের ঝলমলে ফিল্মোগ্রাফিতে খুব উজ্জ্বল একটা নাম হলো ‘নেমসেক’, যেটা তিনি তৈরি করেছিলেন বাঙালি পরিবারের মার্কিন লেখিকা, পুলিৎজারজয়ী ঝুম্পা লাহিড়ির লেখা উপন্যাস অবলম্বনে। 

মীরা নায়ারের অনেক বাঙালি বন্ধুবান্ধব ছিলেন। তাঁর নিজের গানের শিক্ষকও ছিলেন বাঙালি। তিনি বেশ বাংলা বোঝেন। একটু-আধটু বলতেও পারেন। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তার প্রমাণ মিলেছে। বাংলার পাশাপাশি হিন্দি এবং উর্দুতেও তিনি প্রচারণা চালান।

This post was created with our nice and easy submission form. Create your post!

Report

What do you think?

Written by Sultana

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

Loading…

0

বিড়ালের চোখ উপড়ানোয় জড়িতদের খুঁজছে পুলিশ

যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ প্রায় শেষ