রাজশাহী রেলওয়ে অফিসার্স মেস ভবনের সামনে শত শত মানুষের ভিড়। সবার চোখ ড্রেনের দিকে। ভিড় ঠেলে সামনে গিয়ে দেখা যায়, কিছু মানুষ ড্রেনের মধ্যে কি যেন খুব খুঁজছেন। কেউ একজন পেয়েও গেলেন প্রত্যাশিত বস্তুটি। জি তার হাতে ৫০০ টাকার নোট। কি আশ্চর্য, ড্রেনে ভাসছে টাকা!
মূহূর্তের মধ্যেই ড্রেনে টাকার খবর ছড়িয়ে পড়লে দৌরে দৌরে ঘটনাস্থলে যায়। যারা এতোক্ষণ ড্রেনে টাকার কথা শুনে দাঁড়িয়েছিলেন, তারাও নেমে পড়েন সাথে সাথে টাকা কুড়াতে। কেউ দু’একটি নোট পেয়েছেন, আবার কেউ চেষ্টা চালিয়ে যান। শনিবার দুপুরের এহেন টাকার কান্ড শুনে নিশ্চয় হতবাক হচ্ছেন সবাই। তাহলে যারা নিজ হাতে টাকা কুড়াচ্ছেন তারা কতটা অবাক হতে পারেন ভাবুন তো।
প্রত্যক্ষদর্শীরা অনেক অনেক বেক্তি বলে হয়তো কেউ নিজেদের অনিয়ম রুখতে ড্রেনে টাকা ফেলে দিয়েছেন। সেখানে ১ হাজার, ৫০০, ১০০, ২০, ১০ এবং ৫ টাকার নোটও ছিল। টাকা ভাসতে দেখে প্রথমে একজন এবং পরে অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ ড্রেনে নেমে পড়েন। স্থানীয় ভাংড়ি বিক্রেতা টুলু তার কুড়ানো টাকাগুলো রেখেছিলেন পকেটেই। তিনি সাংবাদিকদেও কুড়ানো টাকা দেখিয়ে কিভাবে টাকাগুলো পেলেন তিনি বিবরণ দেন।
তিনি জানান, টাকাগুলো অফিসার্স মেসের পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে চলে যাচ্ছিল। ড্রেনে ভাসতে দেখে তিনি নেমে পড়েন।
আসলাম নামের আরেকজন জানান, তিনি এক হাজার ও ৫০০ টাকার নোট পেয়েছেন।
তবে এই বিষয়ে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মন জানান, খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। প্রথমে টাকা কোথা থেকে এলো তা নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছিল। পরে আসল ঘটনা জানা গেলো, টাকাগুলো মুলত রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের। ওই টাকা সড়ক পরিবহণ গ্রুপের পুরনো কাগজপত্রের ভাজের ভেতর ছিল। নগরীর শিরোইল এলাকায় সড়ক পরিবহন গ্রুপের কার্যালয়। সেখান থেকেই কাগজের সঙ্গে খেয়াল না করে টাকাগুলোও ফেলে দেয়া হয়েছিল। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে খবর ছড়িয়ে পড়ে, এগুলো দুর্নীতি করে জমানো টাকা। ভয়ে ড্রেনে ফেলে দেয়া হয়েছে। এ খবর শুনে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও ড্রেনের কাছে ছুটে যান। পরে তারা টাকার রহস্য খুঁজে পান।
রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক টিটো বলেন, আমরা খুবই বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে গেছি। ভাবতেই পারিনি পুরনো কাগজের ভেতর টাকা থাকতে পারে। তিনি বলেন, কাগজগুলো ২০১০ সালের আগের, পঁচে গেছে। পোড়ানোর উপায় নেই। তাই ড্রেনে ফেলে দেয়া হয়। পরে ড্রেনে টাকা পাওয়ার খবর শুনে আমরাও সেখানে যাই। তারপর ঘটনা দেখি।
তিনি বলেন, সব মিলিয়ে আনুমানিক দুই-তিন হাজার টাকা হতে পারে। তবে খবর ছড়িয়েছে লাখ লাখ টাকা।
This post was created with our nice and easy submission form. Create your post!
GIPHY App Key not set. Please check settings