in

যৌক্তিক-অযৌক্তিক সব দাবিতেই রাজপথ গরম

Students shout slogans during a protest demanding trial of former prime minister Sheikh Hasina, in Dhaka, Bangladesh, Tuesday, Aug. 13, 2024. (AP Photo/Rajib Dhar)

যৌক্তিক কিংবা অযৌক্তিক– যেটাই হোক, দাবি হাসিলের ‘মোক্ষম জায়গা’ হয়ে উঠেছে রাজপথ। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর যেন বয়ে যাচ্ছে দাবি-দাওয়ার নহর। হুটহাট সড়ক-মহাসড়কে নেমে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে যান চলাচল। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে বসে থাকার শঙ্কা নিয়েই ঘর থেকে বের হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

আন্দোলনের সামনে পড়লেই সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সীমাহীন বিপত্তির পাশাপাশি দিনের পরিকল্পনায় লেগে যাচ্ছে ভজকট। পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক, নির্দিষ্ট গন্তব্যের গাড়ি রাস্তায় চলছে কিনা, তা নগরবাসীকে ৯৯৯-এ ফোন করে জেনে নেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছে খোদ ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়ে। নাজুক পরিস্থিতি পার করতে হয় পুলিশ বাহিনীকে। প্রথমে কয়েক দিন রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের দেখা যায়নি। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই নানা সংগঠন, পেশাজীবী, ছাত্র-শ্রমিক বিভিন্ন দাবিতে রাজপথে আন্দোলন শুরু করেন। 

বিশ্লেষকরা বলছেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কেউ কেউ মানুষকে বেকায়দায় ফেলে দাবি আদায়ের চেষ্টা করছে। এটি কাম্য নয়। এমন কৌশল আগেও দেখা গেছে। দাবি-দাওয়ার মধ্য দিয়ে কেউ হীন স্বার্থ হাসিল করছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা উচিত।

তথ্য বিশ্লেষণ করে সমকাল দেখেছে, জানুয়ারিতেই নানা দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ ১১ বার অবরোধের মুখে পড়েছে। এ ছাড়া গেল ২৮ দিনে শুধু ঢাকাতেই দাবি আদায়ে সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভের মতো উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছে ১৬টি। এ ছাড়া শতাধিক আন্দোলন হয়েছে রাজপথে।

এদিকে আন্দোলনের স্রোত দেখে গেল ২৬ আগস্ট পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ সচিবালয় ও প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার আশপাশের এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা ও বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। সেই গণবিজ্ঞপ্তিরও ধার ধারেননি আন্দোলনকারীরা। বিজ্ঞপ্তি দিয়ে হুঁশিয়ারির পরও সচিবালয় ঘিরে বিক্ষোভকারীর অবস্থান দেখা গেছে।

চিকিৎসা ও রেলের মতো জরুরি সেবা বন্ধ করে দাবি আদায়ের মতো ঘটনাও ঘটেছে অহরহ। মঙ্গলবার রাত থেকে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে কর্মবিরতিতে যান রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। পরে অবশ্য বিষয়টি নিয়ে এক ধরনের সমঝোতা হয়। 

২৪ ঘণ্টায় চার ঘটনা

এদিকে গতকাল বুধবার মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার ধানকোড়া ইউনিয়নের গোলড়া গ্রামের কয়েকশ মানুষ ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন। স্থানীয় একটি সড়ক খুলে দেওয়ার দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করলে দেখা দেয় প্রায় ছয় কিলোমিটার যানজট। গতকাল রাজধানীতেও সড়ক অবরোধ করার ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চাকরিচ্যুত সব পুলিশ সদস্যকে পুনর্বহালের দাবিতে রাজধানীর বঙ্গবাজার এলাকায় সদরদপ্তরের সামনে সড়ক অবরোধ করেন ভুক্তভোগীরা। এতে বঙ্গবাজার মোড় পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়। চার দিন আগে এক কিশোর সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার প্রতিবাদে গতকাল রামপুরা টিভি সেন্টারের সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া আলাদা দাবিতে মালিবাগে সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। 

আন্দোলন পরিক্রমা

গত সোমবার শাহবাগ অবরোধ করেন ইবতেদায়ি শিক্ষকরা। আগের দিন রোববারও চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করেন তারা। সেই দিন পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ ছাড়া রোববার পরীক্ষার গুচ্ছ পদ্ধতি বহালের দাবিতে আগারগাঁওয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সামনে বিক্ষোভ ও অবরোধ করেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। গাজীপুরের শ্রীপুরে একই দিন ছাত্র আন্দোলনে গুলির অভিযোগে দায়ের মামলা থেকে একজনের নাম প্রত্যাহারে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জৈনরাপুর এলাকা অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া একই দিন সন্ধ্যায় রাজধানীর সায়েন্সল্যাব, মিরপুরের টেকনিক্যাল মোড় ও পুরান ঢাকায় সড়ক অবরোধ করেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। এতে রাজধানীজুড়েই তীব্র যানজট দেখা দেয়। 

২২ জানুয়ারি মালয়েশিয়া পাঠানোর দাবিতে কারওয়ান বাজার মোড় অবরোধ করেন প্রবাসীরা। একই দিন ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন বেক্সিমকোর ১৬ কারখানার কর্মহীন শ্রমিকরা। আগের দিন তারা শ্রীপুরের সানসিটি মাঠে সমাবেশ করে দাবি আদায়ে রাজপথে নামার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ১৭ জানুয়ারি ডার্ড কম্পোজিট টেক্সটাইলের শ্রমিকরা বকেয়া বেতনসহ বিভিন্ন দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা অবরোধ করেন। আগের দিন ঢাকায় ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’র ওপর হামলার প্রতিবাদে একদল বিক্ষোভাকারী সচিবালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টাকালে শিক্ষা ভবনের সামনে পুলিশ লাঠিপেটা করে। 

১৫ জানুয়ারি পাঠ্যপুস্তকে আদিবাসী শব্দসংবলিত গ্রাফিতি পুনর্বহালের দাবিতে মতিঝিলে বিক্ষোভকারীরা হামলার শিকার হন। ১৪ জানুয়ারি বেক্সিমকোর শ্রমিকরা গাজীপুর ও আশুলিয়ায় কয়েক কিলোমিটারজুড়ে মানববন্ধন করেন। একই দিন বিআরটিসির বাসের ঠিকাদারের লোকজনের মারধরের প্রতিবাদে এশিয়ান হাইওয়ে সড়ক অবরোধ করেন অটোরিকশাচালকরা। ওই দিন ফতুল্লায় সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটে। ১৩ জানুয়ারি ৪০তম ক্যাডেট ব্যাচের ৩২১ এসআই চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন। একই দিন আশুলিয়ার নরসিংহপুরে সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেন শ্রমিকরা। সেই দিনই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবিতে সচিবালয়ের সামনে সড়ক অবরোধ করেন। আগের দিন স্থানীয় ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি ও চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া গোলচত্বর অবরোধ করে রাখেন ভ্যানচালকরা। আহ্‌সান উল্লাহ্ মাস্টার হত্যার মামলার ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি ও বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সরকারের মুক্তির দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের একাংশ বন্ধ রেখে ১১ জানুয়ারি সমাবেশ করে বিএনপি। একই দিন মুন্সীগঞ্জের শ্রীপুরে পুলিশ হেফাজতে থাকা যুবদল নেতা তরিকুল ইসলামকে ছিনিয়ে নেওয়ার প্রতিবাদে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া ৯ জানুয়ারি চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য ও স্বজনরা শাহবাগ অবরোধ করেন। 

৭ জানুয়ারি ‘অবৈধ’ বোর্ড অব ট্রাস্টিজের অপসারণ ও নিজস্ব ক্যাম্পাসের দাবিতে শাহবাগে লংমার্চ করেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মচারীরা। ৬ জানুয়ারি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের ওপর লেগুনা শ্রমিকদের হামলার প্রতিবাদে পুরান ঢাকার তাঁতীবাজার মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। আগের দিন ঢাকার আশপাশের সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকদের মহানগরীতে চলাচলের অনুমতি দেওয়ার দাবিতে বেইলি রোড অবরোধ করা হয়। একই দিন শিক্ষানবিশ এসআইদের অবরোধ কর্মসূচি ছিল ঢাকায়। ২ জানুয়ারি শাহবাগ অবরোধ করেন জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনে আহতরা। বিএসএমএমইউর পরিচালকের পদত্যাগ দাবি করেন তারা। একই দিন সার্ভিস রোড ব্যবহারের দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিয়াকৈর এলাকায় অবরোধ করেন অটোরিকশা চালকরা। এ ছাড়া পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষের ঘটনায় তছনছ হয়েছে মাহ্বুবুর রহমান মোল্লা কলেজ, সোহরাওয়ার্দী কলেজসহ কয়েক প্রতিষ্ঠান। 

তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবি জানিয়ে ১৮ নভেম্বর মহাখালীতে রেল ও সড়কপথ অবরোধ করা হয়। আবার এইচএসসি পরীক্ষা না দেওয়ার আন্দোলন হয়েছে। দাবি আদায়ে একাধিকবার জোর করে সচিবালয়ে ঢুকে পড়ার মতো ঘটনাও দেখা গেছে।

গত ১৩ নভেম্বর জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় আহতরা ক্ষোভ থেকে সড়কে নেমেছিলেন। জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। 

গত ১৯ নভেম্বর হাইকোর্টের এক নির্দেশনার বিরোধিতা করে ঢাকার রাজপথে আন্দোলনে নামেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা। তারা ঢাকার বিভিন্ন এলাকার সড়ক আটকে শুরু করেন আন্দোলন। ২১ নভেম্বর ঢাকার মহাখালীতে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বড় সংঘর্ষ হয়। 

৯৯৯ সেবা

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার থেকে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ আংশিক ট্রাফিক কার্যক্রম চালু করেছে ডিএমপি। এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রায়ই লক্ষ্য করা যায়, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্য রাস্তায় ধর্মঘট, অবরোধ করছে। এতে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ বা সীমিত হয়ে যায়। তাই যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছতে অস্বাভাবিক দেরি হয়। ৯৯৯-এ ফোন করে রাস্তায় গাড়ি চলাচল করছে কিনা– জেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ডিএমপি। এ উদ্যোগ নেওয়ার পর গত ২৪ ঘণ্টায় অনেকেই জাতীয় জরুরি সেবায় ফোন করেছেন। এর মধ্যে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা রোগীসহ পাঁচ ভুক্তভোগীকে সহায়তা করেছে পুলিশ।

কারা কী বলছেন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. তৌহিদুল হক বলেন, ঢাকা এখন দাবি-দাওয়ার নগরে পরিণত হয়েছে। গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে সরকার অনেকের দাবি যৌক্তিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে সমাধান করেছে। তবে কেউ কেউ মানুষকে বেকায়দায় ফেলে দাবি আদায়ের চেষ্টা করছে। দাবি আদায়ের এমন কৌশল অতীতেও দেখা গেছে। দাবি-দাওয়ার মধ্য দিয়ে কারও হীন স্বার্থ রয়েছে কিনা– খতিয়ে দেখা উচিত। আবার কেউ সত্যিকার অর্থে বঞ্চিত হয়ে থাকলে তাদের বিষয় দ্রুত ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে বিবেচনা করা দরকার। 

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার সমকালকে বলেন, দাবি-দাওয়া নিয়ে সড়ক ঘিরে কোনো কর্মসূচি আগাম জানলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়। অনেক সড়ক ডাইভারশন করা হয়। রাজধানীতে একটি সড়কে অল্প সময়ের জন্য যান চলাচল বন্ধ থাকলে দীর্ঘ সময় এর প্রভাব থাকে। রাস্তা বন্ধ থাকলে অনেকে পুলিশকে দায়ী করেন। তাই ৯৯৯-এ নতুন একটি সেবা চালু করা হয়েছে। কেউ সেখানে ফোন করলে তাৎক্ষণিক সড়কের পরিস্থিতি এবং তাঁর করণীয় সম্পর্কে জানতে পারবেন। 

পুলিশ সদরদপ্তরের মুখপাত্র এআইজি ইনামুল হক সাগর বলেন, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয় এমন কর্মসূচি পালন না করতে আমরা অনুরোধ করব। কারও দাবি-দাওয়া থাকলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত জানাতে পারেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সম্প্রতি বলেছেন, আমরা মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। তবে যারা বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন ও সমাবেশ করছেন, তারা ভেন্যু হিসেবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহার করলে রাস্তা বন্ধ হবে না; যানজট কমবে। 

(সাহাদাত হোসেন পরশ)

This post was created with our nice and easy submission form. Create your post!

Report

What do you think?

Written by Sultana

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

Loading…

0

দালান ভাঙতে পারবে, ইতিহাস মুছতে পারবে না

এ মাসেই পদত্যাগ করছেন উপদেষ্টা নাহিদ!