in

মৃতদের প্রতি করণীয়।

মানুষ মরণশীল এটি একটি অনিবার্য সত্য। এর থেকে পালানোর কোনো উপায় নেই। প্রচন্ড ক্ষমতাধর মানুষটিও মারা গেলে চির অসহায় হয়ে পড়ে। ইসলাম মানুষের এই অসহায়ত্বকে সম্মান করে মৃতের শেষকৃত্য সম্পন্ন করা জীবিতদের ওপর ওয়াজিব করে দিয়েছে। শুধু তাই নয় মৃত মানুষের ওপর জীবিতদের আরো কিছু করণীয় আছে। আসুন সে সম্পর্কে জেনে নিই।

মৃত্যুর সংবাদ শুনে ‘ইন্না লিল্লাহি…’ পড়া

যদিও কারো মৃত্যুর খবর শোনা আমাদের জন্য খুব কষ্টের তবুও এমন দুঃসংবাদ আমাদের শুনতে হয়। বিপদ যেনো মানুষকে অপ্রকৃতিস্থ করতে না পারে সেজন্য  আল্লাহ ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন’ পড়তে বলেছেন। অর্থ: ‘নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং আমরা আল্লাহর কাছেই ফিরে যাবো’।

মৃত ব্যক্তির সম্পর্কে ভালো কথা বলা

অসুস্থ মানুষের কাছে গিয়ে শান্তনামূলক কথা বলে তাকে সাহস দিতে হয়, আশা জোগাতে হয়। আর কেউ মারা গেলে তার সম্পর্কে ভালো কথা বলতে হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা কোনো রোগী অথবা মৃত ব্যক্তির কাছে গেলে ভালো কথা বলবে। কারণ, তোমরা যা বলো তার উত্তরে ফেরেশতারা আমিন বলেন।’ মুসলিম, হাদিস নম্বর ২১৬৮।

মৃত ব্যক্তির সমালোচনা না করা

মানুষ মারা গেলে তার আর ভালো-মন্দ কিছুই করার থাকে না। তাই মৃতব্যক্তি সম্পর্কে মন্দ বলা, গালি দেওয়া বা সমালোচনা করা নিষেধ। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা মৃতদের গালি দিও না। কারণ তারা যা পাঠিয়েছে সে পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।’ বুখারি, হাদিস নম্বর ১৩২৯।

অন্য বর্ণনায় বলা হয়েছে- ‘তোমরা মৃতদের গালি দিও না। এতে মৃত ব্যক্তির আত্মীয়রা কষ্ট পায়।’ তিরমিজি, হাদিস নম্বর ১৯৮২।

মৃত ব্যক্তিকে গোসল, কাফন ও সুগন্ধি দেওয়া

মৃত ব্যক্তিকে গোসল, কাফন ও সুগন্ধি মাখানো অনেক বড় সওয়াবের কাজ। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো মৃতকে গোসল দেয়, কাফন পরায়, সুগন্ধি লাগিয়ে দেয়, খাটিয়া বহন করে নিয়ে যায়, জানাজা পড়ে এবং তার কোনো দোষ জেনে গেলে তা গোপন রাখে- আল্লাহ তার সব গোনাহ ক্ষমা করে দেন।’ ইবনে মাজাহ, হাদিস নম্বর ১৪৬২।

লাশের সঙ্গে যাওয়া

মৃত ব্যক্তির খাটিয়া নেয়ার সময়ও লাশের সম্মানের প্রতি খেয়াল রাখতে হয়। যেমন চারজন লোক খাটিয়া বহন করা, ধীর-স্থিরভাবে খাটিয়া নিয়ে চলা, মুসল্লিদের খাটিয়ার পেছনে পেছনে হেঁটে যাওয়া, খাটিয়া রাখার আগে মুসল্লিদের না বসা, লাশ দেখে দাঁড়ানো ইত্যাদি। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যখন তোমরা কারো লাশ দেখবে দাঁড়িয়ে যাবে এবং যে ব্যক্তি তার অনুসরণ করবে, সে যেন খাটিয়া রাখার আগে না বসে।’ বুখারি, হাদিস নম্বর ৩১০৩।

মৃতের শরীরে আঘাত না দেওয়া

মৃত ব্যক্তির প্রতি এতটাই আদব ও সম্মান প্রদর্শন করতে হবে যেন কোনভাবেই মৃত ব্যক্তির শরীরে আঘাত না লাগে। হাদিস শরিফে মৃত ব্যক্তির হাড় ভেঙ্গে ফেলাকে জীবিত মানুষের হাড় ভেঙ্গে ফেলার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির হাড় ভেঙ্গে ফেলা জীবিত মানুষের হাড় ভেঙ্গে ফেলার মতই।’ আবু দাউদ, হাদিস নম্বর ৩২০৯।

জানাজার নামাজ আদায়

ঈমানদার ব্যক্তিকে জানাজার মাধ্যমে শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় চিরবিদায় জানানো হয়। এর মাধ্যমে মৃতের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যদি একশজন মানুষ কোন মৃত ব্যক্তির জানাজার নামাজ পড়ে এবং প্রত্যেকই যদি ওই ব্যক্তির জন্য সুপারিশ করে তবে আল্লাহ তায়ালা তাদের সুপারিশ কবুল করেন।’ মুসলিম, হাদিস নম্বর ২২৪১।

মৃত ব্যক্তির জন্য ক্ষমা ও শান্তি প্রার্থনা করা

ঈমানদার মানুষের মৃত্যুর সংবাদ পেলে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করা জীবিতদের পক্ষ থেকে মৃত ব্যক্তির জন্য উত্তম উপহার। রাসুল (সা.) বলেন, ‘মৃত ব্যক্তি তার পিতা-মাতা, ভাই ও বন্ধুর দিকে দোয়ার আশায় তাকিয়ে থাকে। আল্লাহ তায়ালা কবরবাসীর কাছে পৃথিবীবাসীর ছোট্ট দোয়াকেও অনেক বড় করে উপস্থাপন করেন।’ শোয়াবুল ইমান, হাদিস নম্বর ৯২৯৫।

This post was created with our nice and easy submission form. Create your post!

Report

What do you think?

Written by Azaher Ali Rajib

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

Loading…

0

ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড কানাডার নতুন অর্থমন্ত্রী।

কিছু কিছু কথা পরিবর্তন এনে দিতে পারে।