কোরবানির ঈদ মানেই মাংসের প্রাচুর্য। এমনকি যারা নিজেরা কোরবানি দেন না, তারাও আত্মীয়স্বজন কিংবা প্রতিবেশীদের সৌজন্যে বেশ কিছু মাংস পান। কিন্তু দেশের অনেক মানুষের ঘরে এখনো ফ্রিজ নেই, কিংবা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন গ্রামে ফ্রিজের ব্যবহার একেবারেই সীমিত। সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত মাংস নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। তবে কিছু সহজ উপায়ে ফ্রিজ ছাড়াও কোরবানির মাংস নিরাপদে সংরক্ষণ করা সম্ভব।
মাংস হালকা করে ঝোল বা ভুনা করে ভালোভাবে সেদ্ধ করে রাখলে তা দীর্ঘ সময় টিকে। রান্নার সময় লবণের পরিমাণ খানিকটা বেশি হলে সংরক্ষণে সাহায্য করে। ঠান্ডা হয়ে গেলে মুখবন্ধ পাত্রে রেখে ছায়াযুক্ত ঠান্ডা স্থানে রাখা যায়।
সরিষার তেলে ভেজে রাখা
মাংস ছোট টুকরো করে লবণ ও হলুদ দিয়ে মেখে সরিষার তেলে ভেজে রাখা যেতে পারে। তেলমাখা এই মাংস কিছুদিন ভালো থাকে। ব্যবহারের আগে আবার হালকা করে গরম করলেই হয়।
লবণ দিয়ে শুঁটকি বানানো
একটি পুরনো পদ্ধতি হচ্ছে মাংস শুঁটকি বানানো। মাংস পাতলা করে কেটে প্রচুর লবণ মেখে রোদে শুকিয়ে রাখা যায়। দুই-তিনদিনের সূর্যতাপে শুকিয়ে গেলে অনেকদিন পর্যন্ত ভালো থাকে। এ ধরনের মাংস রান্নার সময় পানি দিয়ে সিদ্ধ করে খেতে হয়।
ভিনেগার ও মসলা মিশিয়ে সংরক্ষণ
মাংসে ভিনেগার, আদা-রসুন বাটা, গরম মসলা এবং লবণ মিশিয়ে কিছুক্ষণ রেখে এরপর হালকা ভেজে নেওয়া যায়। এমনভাবে প্রস্তুত মাংস কয়েকদিন পর্যন্ত ভালো থাকে, বিশেষ করে তেলে ডুবিয়ে রাখা হলে।
কাদামাটির পাত্র বা কলসি ব্যবহার
গ্রামাঞ্চলে এখনো কাদামাটির হাঁড়ি বা কলসি ব্যবহার করা হয় মাংস সংরক্ষণের জন্য। এতে ভেতরে তাপমাত্রা তুলনামূলকভাবে কম থাকে। মাংস ভালোভাবে রান্না করে এই পাত্রে রেখে মুখ শক্ত করে বন্ধ করলে কয়েকদিন ভালো থাকে।
বিশেষ সতর্কতা:
কখনো কাঁচা মাংস পানিতে ডুবিয়ে বা খোলা স্থানে রেখে সংরক্ষণ করা উচিত নয়।
তাপমাত্রা বেশি হলে দিনে একবার অন্তত গরম করে নিতে হবে।
পচন বা দুর্গন্ধ দেখা দিলে সেই মাংস আর গ্রহণযোগ্য নয়।
ফ্রিজ না থাকলেও যত্নবান হলে কোরবানির মাংস সংরক্ষণ সম্ভব। শুধু প্রয়োজন কিছু বাড়তি সতর্কতা এবং ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতির প্রয়োগ। এই উদ্যোগগুলো শুধু খাবার বাঁচায় না, উৎসবের পরও খাবারের নিশ্চয়তা দেয় অনেক পরিবারে।
This post was created with our nice and easy submission form. Create your post!
GIPHY App Key not set. Please check settings