দেশে করোনা পরিস্থিতি ক্রমাগত অবনতি হচ্ছে। দেশে করোনা ভাইরাসে মৃত ও শনাক্ত রেকর্ড ভেঙেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশের ল্যাবগুলোতে ৩৪ হাজার ৩১১টি নমুনা পরীক্ষা করে এই সময়ের মধ্যে ৭ হাজার ২১৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এদিকে গত বছরের ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু ছিল। আর গতকাল ৭ হাজার ৭৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়, যা একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত ছিল।
রাজধানীতে এতদিন করোনা আক্রান্তদের জন্য আইসিইউ বেড পেতে সমস্যা হচ্ছিল। এখন সাধারণ বেডও মিলছে না। সাধারণ ওয়ার্ডগুলোও ভর্তি। কেউ মারা গেলে তবেই খালি হচ্ছে আইসিইউ বেড। অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আসা এক রোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এমন তথ্য
এ বিষয়ে জানতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আতিকুর রহমানের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘করোনার জন্য রাজধানীর সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে বেড খালি নেই। আইসিইউ তো আরও নেই।
মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট এলিনা খান জানান, তিনি নিজেও করোনা আক্রান্ত এক স্বজনের জন্য হাসপাতালগুলোতে অনেক খুঁজেও বেড ম্যানেজ করতে পারেননি।
তিনি বলেন, ‘কেবল আমি নই। আত্মীয়রা যেখানে থেকে পেরেছেন চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ম্যানেজ করা যায়নি। পরে নতুন করে করোনা চিকিৎসা দেয়া শুরু করেছে এমন একটি হাসপাতালে বেড ম্যানেজ করা সম্ভব হয়েছে।’
একই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন ডা. জেসমিন ফেরদৌসী। তিনি বলেন, ‘করোনা আক্রান্ত স্বজনের জন্য পুরো রাত ঢাকার হাসপাতালগুলোতে ঘুরেছি। কিন্তু একটি বেডও পাইনি। তার পরের দিন একটি বেসরকারি হাসপাতালে বেড ম্যানেজ করতে পেরেছি।’
পরে অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমতে শুরু করলে সেখানকার চিকিৎসকরা রোগীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলেন। ঢামেকে নিয়ে যাওয়ার পর শুরু হয় ভোগান্তি। কোথাও একটি আইসিইউ বেড খালি নাই। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর একজন চিকিৎসক জানান হাসপাতালে থাকা এক করোনা রোগী মারা গেছেন। সেই বেড ফাঁকা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানী ঢাকার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোতে রোগীদের জন্য বেড রয়েছে ২ হাজার ৫১১টি। রোগী ভর্তি রয়েছে ২ হাজার ৪০৬ জন। ফাঁকা রয়েছে ১০৫টি। এর মধ্যে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে বেড রয়েছে ২৭৫টি। ভর্তি আছেন ৪২৮ জন। অতিরিক্ত ভর্তি আছেন ১৫৩ জন রোগী।
অধিদফতরের তালিকাভুক্ত বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে বেড রয়েছে ৩ হাজার ৪৬৮টি। তাতে রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৯৯৪ জন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বলেন, ‘বেড খালি হলেই নতুন রোগী ভর্তি করাচ্ছি। আমাদের কোভিডের রোগী থাকে, সাসপেকটেড করোনা রোগী থাকে। বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে আমাদের এখানে আসেন তারা। তাদের তো ফিরিয়ে দিতে পারি না।’
GIPHY App Key not set. Please check settings