in

ট্রাম্পের শুল্কনীতি আটকে দিল মার্কিন আদালত

বিভিন্ন দেশের ওপর ব্যাপকহারে শুল্ক আরোপের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের এই শুল্কনীতি আটকে দিয়েছেন দেশটির এক আদালত। ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতির ওপর আদালতের এই রায়কে একটি বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে। খবর বিবিসির।

কোর্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড রায় দিয়েছে, জরুরি যে আইনের অজুহাত দেখিয়ে হোয়াইট হাউস এই শুল্ক আরোপ করেছে সেই আইন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে একচেটিয়াভাবে বিশ্বের প্রায় সব দেশের পণ্যে শুল্ক বসানোর এখতিয়ার দেয় না।

ম্যানহাটন-ভিত্তিক এই আদালত আরও বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের একচেটিয়া ক্ষমতা কংগ্রেসের হাতে। এক্ষেত্রে মার্কিন অর্থনীতিকে রক্ষা করার জন্য প্রেসিডেন্টের হাতে যে ক্ষমতা, কংগ্রেসের ক্ষমতা তার চেয়ে বেশি।

একইসঙ্গে চীন, মেক্সিকো ও কানাডার ওপর ট্রাম্প প্রশাসন পৃথকভাবে যে শুল্ক আরোপ করেছিল সেটাও স্থগিত করেছে আদালত। তখন হোয়াইট হাউজ বলেছিলো, অগ্রহণযোগ্য মাদক প্রবাহ ও অবৈধ অভিবাসন ঠেকানোই এই শুল্ক আরোপের প্রধান কারণ।

এদিকে, আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে কয়েক মিনিটের মধ্যেই আপিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। আদালতের এই রায়ের পর হোয়াইট হাউসের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি কুশ দেশাই এক বিবৃতিতে বলেন, কোনো জাতীয় জরুরি অবস্থা কীভাবে যথাযথভাবে মোকাবিলা করা হবে, তা নির্ধারণ করা অনির্বাচিত বিচারকদের কাজ নয়।

তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমেরিকাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। আর ট্রাম্প প্রশাসন প্রতিটি নির্বাহী ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে সব সংকট মোকাবিলা ও আমেরিকান মহত্ব পুনরুদ্ধারের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য আমদানিকারক পাঁচটি ক্ষুদ্র ব্যবসার পক্ষে মামলাটি দায়ের করেছিল রাজনৈতিক সংস্থা লিবার্টি জাস্টিস সেন্টার। যে দেশগুলো থেকে তারা পণ্য আমদানি করে, ওই দেশগুলোর পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

এই মামলাই হলো ডোনাল্ড ট্রাম্পের তথাকথিত ‌‘লিবারেশন ডে’ট্যারিফের বিরুদ্ধে প্রথম বড় ধরনের কোনো আইনি চ্যালেঞ্জ। এই মামলাটি ছাড়াও ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য নীতির বিরুদ্ধে আরও ছয়টি মামলা চলছে। এগুলো করেছে ১৩টি মার্কিন অঙ্গরাজ্য এবং আরও অনেক ছোট ব্যবসায়ী গোষ্ঠী।

সর্বশেষ রায়ে তিন বিচারকের প্যানেল থেকে বলা হয়েছে, ট্যারিফ বা শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৯৭৭ সালের ‘ইন্টারন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ইকোনমিক পাওয়ারস অ্যাক্ট’ (আইইইপিএ)-এর দোহাই দিলেও ওই আইন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে একচেটিয়াভাবে এই ধরনের বিস্তৃত ট্যারিফ আরোপের ক্ষমতা দেয় না।

বিচারকরা লিখেছেন, আইইইপিএ আইনে শুল্ক আরোপের বিষয়ে প্রেসিডেন্টকে যে ক্ষমতা দেওয়া আছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প আরোপিত ‘বিশ্বব্যাপী ও প্রতিশোধমূলক শুল্ক আদেশগুলো’ সেই ক্ষমতার পরিধিকে ছাড়িয়ে গেছে। ট্রাফিকিং ট্যারিফ ব্যর্থ, কারণ এগুলো আদেশে উল্লিখিত হুমকির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

গত ২ এপ্রিল ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্যারিফ ঘোষণার পর থেকে বিশ্ববাজারে টালমাটাল পরিস্থিতি দেখা দেয়। যদিও এরপর ওই ঘোষণা পুনর্বিবেচনা করা হয় এবং কিছু শর্ত তুলে নিয়ে অন্যান্য দেশের সঙ্গে দর কষাকষিও করে হোয়াইট হাউস।

তবে আদালত বৃহস্পতিবার এই রায় দেওয়ার পর সকালে এশিয়ার শেয়ারবাজারে সূচকে ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক বেড়েছে, যা প্রায় দেড় শতাংশ। আর অস্ট্রেলিয়ার এএসএক্স ২০০ সূচকেও ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে।

মার্কিন শেয়ার বাজারেও এই রায়ের প্রভাব পড়েছে। ভবিষ্যতে সম্পদ কেনা-বেচা করা যাবে এ সংক্রান্ত শেয়ারের দাম বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে, ইয়েন ও সুইস ফ্রাঁর মতো মুদ্রার বিপরীতে মার্কিন ডলার শক্তিশালী হয়েছে।

This post was created with our nice and easy submission form. Create your post!

Report

What do you think?

Written by Sultana

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

Loading…

0

জাপানের সঙ্গে ১ বিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তার চুক্তিপত্র বিনিময়