in

ঈদে চিঠি বিনিময়: মোদি-ইউনূসের বার্তায় ভ্রাতৃত্ব না কৌশল?

বাংলাদেশ ও ভারতের পারস্পরিক সম্পর্কের টানাপড়েনের মধ্যেই ঈদুল আজহা উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

চিঠিতে বাংলাদেশের জনগণকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে মোদি লেখেন, “ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আপনাকে এবং বাংলাদেশের মানুষকে ঈদের শুভেচ্ছা। ভারতে কয়েক কোটি মানুষ এই উৎসব উদ্‌যাপন করেন। ঈদ আমাদের মধ্যে ত্যাগ, সহানুভূতি ও ভ্রাতৃত্বের শিক্ষা দেয়।” তিনি চিঠিতে ড. ইউনূসের সুস্থতাও কামনা করেন। খবর: ডয়চে ভেলে!

জবাবে ড. ইউনূস লেখেন, “আপনার চিঠি দুই দেশের মূল্যবোধের প্রতিফলন। ঈদ মানুষকে কাছে আনে। আমাদের পারস্পরিক শ্রদ্ধা দুই দেশকে আরও এগিয়ে নিতে পারে।”

তবে এই সৌহার্দ্যপূর্ণ বার্তা বিনিময়ের পেছনে রাজনৈতিক টানাপড়েনও বিদ্যমান। গত বছরের আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্কে শীতলতা বাড়ে। এপ্রিলে ব্যাংককে মোদি-ইউনূসের সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎ হলেও পারস্পরিক সম্পর্কের উত্তাপ কমেনি। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে, সীমান্তরক্ষী বাহিনী ‘পুশ-ইন’ কৌশলের মাধ্যমে সীমান্ত দিয়ে মানুষ ঢুকিয়ে দিচ্ছে, যা দুই দেশের সম্পর্কে আরও চাপ ফেলেছে।

ভারতের সাবেক আমলা ও সাংসদ জহর সরকার জার্মান সংবাদমাধ্যম ডিডাব্লিউ-কে বলেন, “ইউনূস নিজের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তার রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা রয়েছে এবং তিনি ভারতবিরোধীদের সঙ্গেও সম্পর্ক রাখছেন। অতীতে অন্তর্বর্তী সরকারগুলো ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন দিয়েই বিদায় নিয়েছে, কিন্তু ইউনূস তেমন ইঙ্গিত দেননি। ফলে সৌহার্দ্যপূর্ণ এই চিঠি আদান-প্রদান থেকেও তাৎক্ষণিক সম্পর্কোন্নয়ন আশা করা ঠিক নয়।”

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক ইমনকল্যান লাহিড়ী বলেন, “ভারতের কাছে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কতটা বৈধ, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদি ঈদ উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানাতে পারেন, তবে এই চিঠি বিনিময়ের ফলে বড় কোনো কূটনৈতিক লাভ বা ক্ষতি হবে বলে মনে হয় না।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারসাম্যের কৌশল অনুসরণ করছে। একদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়ে সমর্থনের ইঙ্গিত দিচ্ছে, অন্যদিকে ইউনূস সরকারের সঙ্গেও নানা চ্যানেলে যোগাযোগ রাখছে। এই কৌশলকে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বলা হয় ‘ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ’—অর্থাৎ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এগিয়ে যাওয়া। ঈদ উপলক্ষে সৌজন্য চিঠি সেই কৌশলেরই অংশ বলে মনে করছেন কূটনীতিকেরা।

This post was created with our nice and easy submission form. Create your post!

Report

What do you think?

Written by Sultana

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

Loading…

0

চার সদস্যকে নিয়ে ফিরছে ব্ল্যাকপিঙ্ক!

দিনাজপুরে ৭০০ কোটি টাকার লিচুর বাজার, জিআই পণ্যের স্বীকৃতিতে নতু