জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আওয়ামী লীগের নেতারা বলতেন, তারা ২০৪১ সাল পর্যন্ত দেশ লিজ নিয়েছেন। তারা মনে করতেন, আমরা দেশের মালিক আর দেশের ১৮ কোটি মানুষ আমাদের ভাড়াটিয়া। এমনকি ক্ষমতায় টিকে থাকতে তারা নিজ দলের নেতাকর্মীদেরও ভয় দেখাতেন। আওয়ামী লীগের বড় নেতারা বলতেন, তোমরা দুর্নীতি-অনিয়ম, খুন-খারাপি; যা খুশি করো, কিন্তু আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে হবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে একদিনে ৫ লাখ নেতাকর্মীকে হত্যা করে ফেলবে।
রোববার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে ফরিদপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠার হিংস্র তাণ্ডবের কাছে বাংলাদেশ সেদিন পথ হারিয়েছিল। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৩৯ জন মানুষকে সেদিন লগি-বৈঠা দিয়ে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছিল। লাশের উপর সেদিন বিকৃত নিত্য করা হয়েছিল। সেদিন মানবতার বুক ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। অনেক লড়াই সংগ্রামের পর মানুষের হাতে এ দেশ আবার তুলে দেওয়া হয়েছে। যাদের কারণে দেশ ফিরে পেয়েছি, আমাদের ভালবাসা, শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা সেই ছাত্র-জনতার জন্য। আমরা তাদেরকে স্যালুট জানাই।
সম্মেলনে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্ধেশ্যে জামায়াতের আমির বলেন, আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে আজ বক্তব্য দিতে পারবো, এটা কখনো ভাবিনি। আল্লাহ সুযোগ করে দিয়েছেন, তাই এখানে এসেছি। আপনাদের ফরিদপুরে জামায়াতের ইসলামীর দুই জন শীর্ষ নেতা ছিলেন। তারা হলেন, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল শহীদ আলী আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদ ও সহকারী জেনারেল শহীদ আব্দুর কাদের মোল্যা। তাদের অত্যন্ত নিষ্ঠরভাবে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে খুন করা হয়েছে। আমরা এই খুনের বিচার চাই।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ গুম-খুনের রাজত্ব কায়েম করেছিল। তারা শুধু আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করেনি। তারা বিএনপি, হেফাজত নেতাকর্মী, আলেম-ওলামা ও সাধারণ মানুষকে হত্যা ও গুম করেছে। এমনকি দেশপ্রেমিক ৫৭ জন সেনাকর্মকর্তাকেও তারা খুন করেছে। তারা মানুষের জীবন নিয়ে উপহাস করেছেন। আওয়ামী লীগ দেশকে ভালবাসতো না। তারা দেশকে ভালবাসলে এভাবে পালিয়ে যেতো না।
ফরিদপুর জেলা জামাত আমির মাওলানা মুহাম্মদ বদরুদ্দনীনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মো. দেলোয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় মাজলিসে শুরা সদস্য প্রফেসর আব্দুত তাওয়াব, শামসুল ইসলাম আল বরাট, শহীদ আলী আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদের ছোট ছেলে আলী আহমেদ মাবরুর, শহীদ আব্দুল কাদের মোল্যার ছোট ছেলে হাসান মওদুদ প্রমুখ।
This post was created with our nice and easy submission form. Create your post!
GIPHY App Key not set. Please check settings