পূর্ব এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় বড় ধরনের রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটেছে। দেশটির সাংবিধানিক আদালত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলকে তার পদ থেকে অপসারণ করেছে। এর ফলে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে দেশটিতে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, ইউন গত বছর সামরিক আইন জারি করে জনগণের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করেছেন।
২০২৪ সালের ৪ এপ্রিল, শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার সাংবিধানিক আদালত এই রায় ঘোষণা করে। আদালতের মতে, গত বছরের ৩ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল স্বল্প সময়ের জন্য সামরিক আইন জারি করেন। তার দাবি ছিল, রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি ও উত্তর কোরিয়াপন্থী ব্যক্তিরা সরকারে অনুপ্রবেশ করেছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিনি সামরিক আইনের আশ্রয় নেন। তবে আদালত মনে করে, এই পদক্ষেপ ছিল সংবিধানবিরোধী এবং জনগণের অধিকার হরণ করে। প্রেসিডেন্ট ইউন ওই সময় জাতীয় পরিষদ বন্ধ করতে চেয়েছিলেন এবং তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আটকের জন্য সামরিক ও পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। তার এই পদক্ষেপ সংসদের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে। এরপর সংসদের ভোটে তিনি অভিশংসিত হন। যদিও তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরাতে সাংবিধানিক আদালতের অনুমোদন প্রয়োজন ছিল।
আদালতের আট বিচারকের মধ্যে ছয়জন প্রেসিডেন্ট ইউনকে অপসারণের পক্ষে রায় দেন। ফলে আইনগত জটিলতা শেষ হয়ে এবার তাকে চূড়ান্তভাবে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো। যদিও অভিশংসনের পর থেকে ইউন কোনও নির্বাহী ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারছিলেন না, তবে তিনি এখনও পদে বহাল ছিলেন। শুক্রবারের এই রায়ের মাধ্যমে তার দায়িত্বের সম্পূর্ণ সমাপ্তি ঘটল। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে নতুন করে রাজনৈতিক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচন কমিশন এখন আগামী দুই মাসের মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেলেও বেশিরভাগই মনে করছে, আদালতের এই রায় গণতন্ত্রের সঠিক প্রতিফলন। সূত্র : আল-জাজিরা।
This post was created with our nice and easy submission form. Create your post!
GIPHY App Key not set. Please check settings