স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার প্রায়শই ব্যাঘাত ঘটায় আমাদের মনোযোগে, আর তাই বিঘ্ন ঘটে কাজে। তবে স্মার্টফোনের আসক্তি কাটিয়ে কাজে মনোনিবেশ করার বেশ কিছু উপায় কিন্তু রয়েছে। তাহলে চলুন উপায়গুলো জেনে নেওয়া যাক:
১। ফোনটিকে গ্রেস্কেল মোডে নিয়ে আসা
স্মার্টফোনের গ্রেস্কেল মোড অ্যাকটিভেট করে দিলে ডিসপ্লেতে সবকিছু সাদা ও কালো (ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট) রঙে দেখা যাবে। ফলে মনস্তাত্ত্বিকভাবেই ফোন ব্যবহারের অভিজ্ঞতায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং সার্বিকভাবে স্মার্টফোন কম আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে ব্যবহারকারীদের কাছে। স্বাভাবিকভাবেই ফোনে আসক্তিও ধীরে ধীরে কমতে শুরু করবে। এছাড়াও অনেকেই মনে করেন, অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহারের ফলে ঘুমের যে ব্যাঘাত ঘটে সেটা থেকেও মুক্তি পাওয়া সম্ভব গ্রেস্কেল মোডে ফোন ব্যবহার করলে।
২। সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপসে স্ক্রিনটাইম লিমিট দিয়ে রাখা
স্মার্টফোন আসক্তির একটি বড় কারণ হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপসগুলো। এই যেমন ব্যবহারকারীদের অনেকেই কিছুক্ষণ পর পর ফেসবুকে টাইমলাইন স্ক্রল করেন, স্ট্যাটাস দিয়ে থাকেন। আবার অনেকে ইউটিউবে ভিডিও দেখে কাটিয়ে দেন দিনের বড় একটি সময়। ফলে কাজের ক্ষেত্রে এর বিরুপ প্রভাব পড়ে। সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার একটি কার্যকর উপায় হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপসগুলোতে- বিশেষ করে যেগুলোতে আপনার অ্যাকাউন্ট আছে বা আপনি নিয়মিত ভিজিট করেন- স্ক্রিনটাইম লিমিট দিয়ে রাখা। অর্থাৎ, দিনের কতটুকু সময় আপনি কোন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপে ব্যয় করতে ইচ্ছুক সেটা আগে থেকেই সেট করে দিতে পারেন। এতে করে এই অ্যাপসগুলোতে আপনার প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময় ব্যয় করতে হবে না।
৩। লম্বা একটি পাসওয়ার্ড সেট করে দেওয়া
স্মার্টফোনের স্ক্রিনলক অপশন হিসেবে ফেসলক ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট বেশ জনপ্রিয়। কেননা এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা খুব সহজেই কোনো প্রকার সময়ক্ষেপণ ছাড়াই স্মার্টফোনের হোম স্ক্রিনে প্রবেশ করতে পারেন। মূলত ব্যবহারকারীদের সুবিধার জন্যই ফেসলক ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট ফিচার দুটি নিয়ে আসে স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। কিন্তু স্মার্টফোন আসক্তি কাটিয়ে উঠার বেশ কার্যকর একটি উপায় হচ্ছে এই দুটো ফিচার পরিহার করে স্ক্রিনলক হিসেবে লম্বা একটি পাসওয়ার্ড সেট করা। স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের মনস্তত্ব বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, লম্বা পাসওয়ার্ড সম্বলিত স্ক্রিনলক ব্যবহারকারীদের বিরক্তির কারণ হয়ে উঠে। ফলে অবচেতন মনেই তারা স্মার্টফোনের ব্যবহার কমিয়ে দেয়। বিশেষ করে কোনো প্রকার প্রয়োজন ছাড়াই স্মার্টফোন ব্যবহারের প্রবণতা কমে যায় বহুলাংশে।
৪। স্মার্টফোনে ডিএনডি (ডু নট ডিসটার্ব) মোড অন করে দেওয়া
কাজের সময় মনোযোগ ধরে রাখতে ব্যবহার করতে পারেন ডিএনডি বা ডু নট ডিসটার্ব মোড। এই মোডটি অ্যাকটিভেট করলে ডিভাইসের সকল নোটিফিকেশন মিউট হয়ে যাবে। অর্থাৎ, ইনকামিং কল, নোটিফিকেশন মেসেজের সাউন্ড, মেসেজ ভাইব্রেশন, ভিজ্যুয়াল অ্যালার্টসহ সকল প্রকার সাউন্ড ও ভাইব্রেশন মিউট হয়ে যাবে।
৫। সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপের নোটিফিকেশন বন্ধ করে দেওয়া
যাদের স্মার্টফোন আসক্তির মূল কারণ সোশ্যাল মিডিয়া, তারা চাইলে সোশ্যাল মিডিয়ার নোটিফিকেশন প্রয়োজন অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ করে রাখতে পারেন। বিশেষ করে অফিসে কাজের সময় বা পড়াশোনার সময় মনোযোগ ধরে রাখতে এটি হতে পারে কার্যকর একটি উপায়। তবে পেশাগত কাজে প্রয়োজন হয় এমন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপের নোটিফিকেশন বন্ধ করা উচিত হবে না। যেমন কারো অফিসে ফাইল আদান-প্রদানে যদি হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করা হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে হোয়াটসঅ্যাপ ছাড়া অন্য সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপগুলোর নোটিফিকেশন বন্ধ করা যেতে পারে।
This post was created with our nice and easy submission form. Create your post!
GIPHY App Key not set. Please check settings