স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাসিওতে তিন এবং ইয়াংগনের কাছে বাগো অঞ্চলে চার জন নিহত হয়েছে বলে খবর দিয়েছে। উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় হোপিন শহরেও এক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে।
সব মিলিয়ে শনিবার মিয়ানমারজুড়ে অন্তত ১১৪ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে মিয়ানমার নাও। রয়টার্স নিহতের এ সংখ্যা সঠিক কিনা, তা যাচাই করতে পারেনি। সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্রের কাছে এ প্রসঙ্গে জানতে চেয়ে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।
এদিকে, গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভকারীদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যার প্রতিশোধ নিতে ফুঁসে উঠছে মিয়ানমারের আদিবাসী বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র দলগুলো। ‘দ্য কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন’ নামে একটি সশস্ত্রগোষ্ঠী থাইল্যান্ড সীমান্তের কাছে একটি সেনাপোস্টে হামলা চালিয়ে একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেলসহ ১০ সেনা সদস্যকে হত্যা করার দাবি করেছে।
এর জবাবে কারেন সশস্ত্র গোষ্ঠীটির নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের একটি গ্রামে সামরিক জঙ্গি বিমানগুলো হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত দুই জন নিহত হয়েছেন বলে একটি সুশীল সমাজ গোষ্ঠী জানিয়েছে। এ বিষয়ে জানতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে সাড়া পাওয়া যায়নি।
ক্ষমতাচ্যুত আইনপ্রণেতাদের জান্তাবিরোধী গোষ্ঠী সিআরপিএইচের মুখপাত্র ড. সাসা একটি অনলাইন ফোরামে বলেছেন, “আজ সশস্ত্র বাহিনীর জন্য লজ্জা দিবস। চারশর বেশি নিরাপরাধ বেসামরিক মানুষকে হত্যার পর সামরিক বাহিনীর জেনারেলরা সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালন করছেন।”
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটিতে ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে শুরু হওয়া আন্দোলনে মোট নিহতের সংখ্যা এখন ৪৪০ ছাড়িয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত এ সংখ্যা ৩২৮ এ ছিল বলে জানিয়েছে মিয়ানমারের ঘটনাবলী পর্যবেক্ষণকারী গোষ্ঠী অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিকাল প্রিজনার্স (এএপিপি) ।
শনিবার সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাজধানী নেপিডোতে সামরিক কুচকাওয়াজে সভাপতিত্ব করার পর মিয়ানমারের শীর্ষ জেনারেল মিন অং লাইং নির্বাচন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। যদিও কবের মধ্যে তিনি এ প্রতিশ্রুতি পূরণ করবেন, তার সময়সীমা বলেননি।
তিনি বলেছেন, “গণতন্ত্রের সুরক্ষায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী পুরো জাতির সঙ্গে হাতে হাত রেখে কাজ করতে চায়। যে দাবিতে নৃশংস কর্মকাণ্ড ঘটানো হচ্ছে, যার ফলে দেশের স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তা বিনষ্ট হচ্ছে সেটা সঠিক দাবি নয়।”
অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের কারণ ব্যাখ্যায় লাইং বলেন, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতা অং সান সু চি এবং তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির ‘বেআইনী কার্যকলাপের’ কারণে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করেছে।
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটিতে ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের প্রতিক্রিয়ায় এরই মধ্যে পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সেনা পরিচালিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
GIPHY App Key not set. Please check settings