আজ থেকে লক্ষ লক্ষ বছর আগে এশিয়া, আফ্রিকা, উত্তর আমেরিকায় ও উত্তর রাশিয়া দাপিয়ে বেড়াত হাতির পূর্বপুরুষ,দামাল দাঁতাল ম্যামথরা। আদিম মানুষ ম্যামথদের হাড় বাসস্থান ও অস্ত্র তৈরির কাজে এবং দাঁত অলঙ্কার তৈরির কাজে ব্যবহার করত। লম্বায় এক একটি দাঁত কুড়ি ফুট পর্যন্ত এবং ওজনে ২০০ থেকে ২৫০ কেজি হতো। মাংসের জন্যও তারা ম্যামথ শিকার করত। পুরুষ ম্যামথ থেকে প্রায় ৬০০০ কেজি ও স্ত্রী ম্যামথ থেকে প্রায় ৪০০০ কেজি পর্যন্ত মাংস মিলত। আকৃতিতে ম্যামথ আজকের আফ্রিকান হাতির সমান ছিল।
কিন্তু এখনকার হাতির মতো পোষ মানেনি ম্যামথরা। তারা ছিল হিংস্র দানবের মতো। ২৬ লক্ষ বছর আগে পৃথিবীতে এসেছিল তারা। আর পৃথিবীর মূল ভূখণ্ডগুলো থেকে ম্যামথরা বিলুপ্তপ হয়ে গিয়েছিল ১১ হাজার ৭০০ বছর আগে। হারিয়ে যাওয়া সেই লোমশ দানবরা আবারও ফিরছে পৃথিবীতে। বিজ্ঞানই ফেরাচ্ছে এই ম্যামথদের। জীববিজ্ঞানী জর্জ চার্চ এমনটাই দাবি করেছেন। কীভাব এই হাতি বানাবেন সেটাও জানিয়েছেন তিনি। তার সঙ্গে কাজ করছেন আরও কয়েকজন জীববিজ্ঞানী।
চার্চ বলেছেন, তাঁর তৈরি হাতি দেখতে ম্যামথের মতো হবে। এই হাইব্রিড হাতির নাম দেওয়া হয়েছে ম্যামোফ্যান্ট (ম্যামথ+এলিফ্যান্ট) নকল ম্যামথ বা ম্যামোফ্যান্ট বানাতে কী করবেন চার্চ সেটাও জানিয়েছেন তিনি। তিনি এশিয়ার হাতির জিনে এমন কিছু কারিগরি করবেন যাতে কৃত্রিম উপায়ে তৈরি হওয়া ম্যামোফ্যান্ট আকৃতিতে ম্যামথের মতো হবে। ম্যামথের মতোই প্রচণ্ড ঠান্ডায় বাঁচতে পারবে। তাদের দাঁত ও লোম ম্যামথের মতো বড় বড় হবে। গায়ে চর্বির পরিমাণও হবে ম্যামথের মতোই।
চার্চের কথা অনুযায়ী ম্যামথের মতো দেখতে রোমশ হাতি বানাতে গেলে লাগবে ম্যামথের কোষের নিউক্লিয়াস যার মধ্যে জিনগুলি অক্ষত অবস্থায় আছে। সেই নিউক্লিয়াসটি আবার ম্যামথের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত প্রাণী বা হাতির ডিম্বাণুতে বসাতে হবে। সেখান থেকেই নির্দিষ্ট সময় পরে জন্মগ্রহণ করবে ম্যামথ শাবক।
২০১৫ সালেই চার্চ ঘোষণা করেন, তিনি একটি এশিয়ার হাতির চামড়ার কোষকে স্টেম সেলে পরিণত করবেন, যে স্টেমসেল ভ্রূণ তৈরি করতে সক্ষম। বিজ্ঞানী চার্চ তার পরীক্ষায় এশিয়ার হাতি নিয়েছিলেন। কারণ এরা হচ্ছে হচ্ছে ম্যামথের নিকট আত্মীয়।
২০১৭ সালে চার্চ জানান, তিনি এশিয়ার হাতির ৪৫ টি জিনের পরিবর্তন ঘটিয়ে ম্যামথের জিনের মতো করে দিয়েছেন। তার আর মাত্র দু’বছর লাগবে ম্যামথ তৈরি করতে। চার্চের হিসেবে ২০১৯ সালে পৃথিবীর বুকে ভুমিষ্ঠ হওয়ার কথা ছিল ম্যামোফ্যান্টের। কিন্তু সেই সময়সীমা পেরিয়ে গেছে। ২০১৯ পেরিয়ে এসে গেছে ২০২০ সাল। পৃথিবীতে এখনও আসেনি ম্যামথ বা ম্যামোফ্যান্ট। এখনও চুপ বিজ্ঞানী জর্জ চার্চ। কেন তিনি চুপ, এটা নিয়ে যখন শোরগোল তখনই জানা গেল চার্চ বিশ্ববাসীকে চমকে দিতে চান, তাই অপেক্ষা করাচ্ছেন পৃথিবীকে। খুব শিগগিরই তিনি হাজির হবেন তার বানানো দৈত্যাকার ম্যামথ নিয়ে।
This post was created with our nice and easy submission form. Create your post!
GIPHY App Key not set. Please check settings